করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেরবার দেশ। এই পরিস্থিতিতে ফের একবার কাজের জায়গা থেকে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে সমূহ বিপদের মুখে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে একটি সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, এইসব পরিযায়ী শ্রমিকদে ন্যূনতম সুবিধা দেওয়া তো দূর, যে সব রাজ্যে তারা কাজ করতে গিয়েছে, সেখানে তাদের সঙ্গে বহিরাগতদের মতো আচরণ করা হচ্ছে।
সমীক্ষা অনুসারে, গবেষকরা মোট ৪ হাজার ৪০০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের, স্থানীয় শ্রমিক, চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক, রাজ্য সরকারি কর্মচারি, নির্বাচিত প্রতিনিধি, গবেষক, বিশেষজ্ঞ, স্বেচ্ছেসেবী সংস্থার প্রতিনিধি, শ্রমিক ইউনিয়ন সদস্যের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, হরিয়ানায় এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। এই রাজ্যগুলোতে কাজ করতে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ওডিশা, ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তিশগড় থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরাই মূলত কাজ করতে যায়।
এইসব পরিযায়ী শ্রমিকরা সাধারণত, কম টাকায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে থাকে। যেমন, নির্মাণকাজ, ভারী শিল্প, পরিবহণ, পরিষেবা, কৃষি, স্বাস্থ্য পরিষেবা, সামাজিক সুরক্ষা, শিক্ষা পরিষেবা, আবাসন ও সাফাইয়ের কাজ করে থাকে।
এই সমীক্ষা অনুসারে দিল্লি সংলগ্ন অঞ্চলের প্রায় ৮৪ শতাংশ অভিবাসী শ্রমিক জানিয়েছেন, তাঁদের থাকার জন্য ভালো জায়গা নেই। দিল্লি ছাড়া অন্য কোনো অঞ্চলে এই অভিবাসী শ্রমিকরা ভালো চিকিৎসার সুযোগ পাননা। একমাত্র দিল্লির ৯৪.৫ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন তাঁরা স্থানীয় মহল্লা ক্লিনিকে চিকিৎসার সুবিধা পান।
ওই সমীক্ষা অনুসারেই ৬৮ শতাংশ মহিলা জানিয়েছেন তাদের কাছে বাথরুম ব্যবহারের সুযোগ নেই। মুম্বাইতে অভিবাসী শ্রমিকদের ৬২ শতাংশ বস্তিতে থাকেন। সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে প্রতি মাসে অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের মধ্যে দিল্লিতে মারা যান ৪৩ জন, গুজরাটে ৩৫ জন, হরিয়ানায় ৪১ জন এবং মহারাষ্ট্রে ৩৮ জন। মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা, হার্টের এবং পাকস্থলীর সমস্যা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন