বলিউড তারকা শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খানকে "ফাঁদে ফেলে, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয়েছিল"। রবিবার চাঞ্চল্যকর এই দাবি করেছেন এনসিপি মুখপাত্র তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক। এদিন মালিক বলেন, বলিউড মেগাস্টার শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ানকে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর কর্ডেলিয়া ক্রুজ রেভ পার্টির অভিযানে ফাঁদে ফেলে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো।
মালিক আরও দাবি করেছেন, গত ৬ অক্টোবর থেকে শাহরুখ খান এনসিবি জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ের ওপর ‘এক্সপোজ সিরিজ’ তৈরি শুরু করার পর থেকেই তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, "এই ঘটনায় চারজন ব্যক্তি যুক্ত - ওয়াংখেড়ে, তার জুনিয়র ভি ভি সিং, আশীষ রঞ্জন এবং তাদের এক ড্রাইভার মানে...তাঁরা এনসিবি অফিসের চারজন...তারা হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিদের ফাঁসানোর জন্য প্রাইভেট আর্মি চালায় এবং তারপর তোলাবাজি করে তাঁদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করে।”
এনসিপি জাতীয় মুখপাত্রর দাবি অনুসারে, কথিত এই 'প্রাইভেট আর্মির' অন্য সদস্যরা হলেন কিরণ গোসাভি, মোহন ভানুশালী, স্যাম ডিসুজা - যাদের আসল নাম সানভিল স্টেনলি ডি'সুজা, মোহিত কম্বোজ-ভারতীয় এবং সুনীল পাটিল।
শনিবার বিজেপি নেতা ভারতীয়র অভিযোগের জবাবে মালিক জানান, তিনি কখনও সুনীল পাটিলের সাথে দেখা করেননি বা পাটিল কোনওভাবেই এনসিপির সাথে যুক্ত নন।
এনসিপি নেতার মতে, আরিয়ান খান, প্রতীক গাবা এবং আমির ফার্নিচারওয়ালা ক্রুজার পার্টিতে আমন্ত্রিত ছিলেন। দুজনেই ঋষভ সচদেবার বন্ধু - যিনি ভারতীয়র সঙ্গে যুক্ত।
সাক্ষী প্রভাকর সাইলের হলফনামা উল্লেখ করে মালিক বলেন, "এখন এই ঘটনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, আরিয়ান খানকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং তার মুক্তির জন্য ২৫-কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। চূড়ান্ত অঙ্ক ঠিক হয়েছিলো ১৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যে ঘটনার মাষ্টারমাইন্ড মোহিত কম্বোজ-ভারতীয় নিয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, ওই পার্টিতে যোগ দেবার জন্য কংগ্রেসের একজন মন্ত্রী আসলাম শেখ এবং অন্যান্য মন্ত্রীদের সন্তানদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
মালিক ভারতীয়র বিরুদ্ধে মুম্বাইতে এক ডজন হোটেলের মালিকানার অভিযোগ এনেছেন। মালিকের দাবি, মোহিত কম্বোজ ভারতীয় ১,১০০ কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে একজন অভিযুক্ত। তিনি ওয়াংখেড়ের কাছাকাছি থাকতেন এবং তিনি তার 'বেসরকারী সেনাবাহিনীর' সদস্য। যে দল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে তাদের কাছ থেকে বড় অর্থ আদায় করে থাকে।
গতকাল মোহিত কম্বোজ ভারতীয়র আনা অভিযোগের একদিন পর এনসিপি নেতা নবাব মালিক রবিবার সাংবাদিকদের সামনে তাঁর বক্তব্য জানান। গতকাল মোহিত কম্বোজ ভারতীয় অভিযোগ করেন যে, ক্রুজার অভিযানের পিছনে আসল মাথা ছিল সুনীল পাটিলের। যিনি এনসিপি নেতা এবং মন্ত্রীদের খুব ঘনিষ্ঠ। এমনকি তিনি কিরণ গোসাভির সঙ্গে তাঁর (সুনীল পাটিল) ও গুজরাটের এক ক্যাবিনেট মন্ত্রী কিরীটসিংহ রানার একটি ছবি প্রকাশ করেছিলেন।
কংগ্রেস মুখপাত্র অতুল লন্ডে-পাটিল এই প্রসঙ্গে বলেন, এটা খুবই অদ্ভুত ঘটনা যে এনসিপির সাথে সুনীল পাটিলের যোগাযোগের অভিযোগ করা হয়েছে, অথচ বিজেপির একজন মন্ত্রীর সাথে তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
লন্ডে আরও দাবি করেন, "এই সবকিছুই আসলে মুন্দ্রা বন্দরের মাধ্যমে গুজরাটে প্রবেশ করা বেশ কয়েক টন মাদকের বিশাল পরিমাণ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেওয়ার জন্য। কেন ওই ঘটনা নিয়ে কথা বলছে না? ওই সমস্ত মাদক কোথায় গেল? ... এর সম্পূর্ণ তদন্ত হওয়া উচিত।"
- with IANS inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন