প্রবীণ নাগরিকদের কোনো ভর্তুকি না, সাংসদদের জন্য কোটি কোটি ব্যয়, RTI-এ উঠে এল রেলের চরম বৈষম্যের ছবি

২০২১-২২ সালে সাংসদদের জন্য ব্যয় হয়েছে ৩.৯৯ কোটি টাকা, ২০২০-২১ সালে ২.৪৭ কোটি টাকা, ২০১৯-২০ সালে ১৬.৪ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ সালে ১৯.৭৫ কোটি টাকা এবং ২০১৭-১৮ সালে ব্যয় হয়েছে ১৯.৩৪ কোটি টাকা।
৫ বছরে সাংসদদের ভর্তুকি দিতে গিয়ে ৬২ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয় করেছে কেন্দ্র
৫ বছরে সাংসদদের ভর্তুকি দিতে গিয়ে ৬২ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয় করেছে কেন্দ্রগ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

সাংসদদের ট্রেন সফর আনন্দপূর্ণ করে তোলার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে ভারতীয় রেল। বিনামূল্যে যাতায়াতের সুবিধা ছাড়াও ট্রেনে সফরকালে একাধিক সুবিধা পান সাংসদরা। কিন্তু সিনিয়র সিটিজেনদের সামান্য ভর্তুকিও দিতে অস্বীকার করেছে রেল। তথ্যের অধিকার আইন মারফত পাওয়া নথিতে এই তথ্য উঠে এসেছে।

২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সমস্ত ছাড় প্রত্যাহার করেছে ভারতীয় রেল। যদিও সাংসদ এবং প্রাক্তন সাংসদদের জন্য ট্রেনের টিকিটে ভর্তুকি সহ একাধিক সুযোগসুবিধা অব্যাহত রয়েছে।

RTI এর মাধ্যমে পাওয়া নথিতে দেখা যাচ্ছে গত ৫ বছরে সাংসদ এবং প্রাক্তন সাংসদদের রেলপথে ভ্রমণে ভর্তুকি দিতে গিয়ে ৬২ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয় করেছে কেন্দ্র। চন্দ্র শেখর গৌড় নামের এক ব্যক্তির করা আরটিআইয়ের জবাবে লোকসভা সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে - "রেল মন্ত্রকের কাছ থেকে ডেবিট বিলগুলি পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিস মারফত আসে এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য সেগুলো MSA শাখায় পাঠানো হয়। MSA শাখা থেকে প্রাপ্ত ডেবিট বিলের তথ্য অনুযায়ী ২০২১-২২ সালে সাংসদ এবং প্রাক্তন সাংসদদের জন্য ব্যয় হয়েছে ৩.৯৯ কোটি টাকা, ২০২০-২১ সালে ব্যয় হয়েছে ২.৪৭ কোটি টাকা, ২০১৯-২০ সালে ১৬.৪ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ সালে ১৯.৭৫ কোটি টাকা এবং ২০১৭-১৮ সালে ব্যয় হয়েছে ১৯.৩৪ কোটি টাকা।"

২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথম দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন। ওই মাস থেকেই সিনিয়র সিটিজেনদের ওপর ভর্তুকি প্রত্যাহার করেছে রেল। এর ফলে এখান থেকে ১,৫০০ কোটির রাজস্ব উপার্জন করেছে রেল।

যদিও সরকারী নিয়ম অনুযায়ী, সিনিয়র সিটিজেন পুরুষদের জন্য ট্রেনের টিকিটে ৪০ শতাংশ এবং মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।

আরটিআই মারফত জানা গেছে ২০২০ সালের ২০ মার্চ মাস থেকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ মাস পর্যন্ত ৭.৩১ কোটি সিনিয়র সিটিজেন ভর্তুকিযুক্ত ট্রেনের টিকিট ছাড়াই ভ্রমণ করেছেন। এই সময়ের মধ্যে সিনিয়র সিটিজেনদের টিকিট থেকে রেলের আয় হয়েছে ৩,৪৬৪ কোটি টাকা।

৭৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ভর্তুকি তুলে দেওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন, "এই মুহূর্তে যারা কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে তারা সিনিয়র সিটিজেনদের কোনো মূল্যই দেয় না। বিধায়ক-সাংসদরা পেনশন, বিনামূল্যে ক্যান্টিন পরিষেবা সবকিছুই পান। কিন্তু জনগণ কিছুই পায় না। আমাদের ভর্তুকি ফিরিয়ে আনা উচিত আবার।"

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in