কলকাতা পুরসভার নিরানব্বই নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় আড়াইশো বাসিন্দা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর পাননি কোনও মোবাইলে এসএমএস। শনিবার চাঞ্চল্যকর এই তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে অন্যদিকে কো-উইন অ্যাপেও মিলছে না তাঁদের ভ্যাকসিন নেওয়ার কোনও তথ্য। কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পর থেকেই রাজ্যে জুড়ে আতঙ্কের ছায়া। যারা ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন নিয়েছেন বা ভ্যাকসিন নেবেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সকলের এখন সজাগ দৃষ্টি রয়েছে কোভিড সার্টিফিকেটের দিকে।
যদিও এই ঘটনায় কলকাতা পুরসভার তরফে সকলকে আশ্বস্ত করে পুর প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য ও প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন, কোভিড টিকার দ্বিতীয় ডোজের পরেই মিলবে সার্টিফিকেট। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে প্রযুক্তিগত কারণে এই সমস্যা হয়েছে। তাই প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হতে পারে এমনটাই মত প্রযুক্তিবিদদের। কিন্তু নিয়ম অনুসারে কো-উইন অ্যাপে আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।
কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পর থেকেই চোখ খুলে গিয়েছে সাধারণ মানুষের। এই অবস্থায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওই ওয়ার্ডের আড়াইশো বাসিন্দা। তাঁরা এখন দিশেহারা। কারণ তাঁদের অনেকেই হয়ত আগামীদিনে পাড়ি দেবেন ভিন রাজ্যে বা বিদেশে। কেউ বা বিদেশে যাবেন চাকরি সূত্রে, আবার কাউকে অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার জন্য ভিন রাজ্যে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন কোভিড টিকার ছাড়পত্র অথবা কো-উইন অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন। কিন্তু কোনও ভাবেই তাঁদের টিকাকরণের তথ্য মিলছে না। এ প্রসঙ্গে অতীনবাবু জানিয়েছেন, 'প্রথম ডোজের টিকা নিলে কোনও সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না। মোবাইলে এসএমএস আসে। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।'
কিন্তু এখন প্রশ্ন একটাই, কো-উইন অ্যাপে যদি কোনও তথ্য না থাকে তবে কিসের ভিত্তিতে দ্বিতীয় টিকার ডোজ দেওয়া হবে? কারণ জানতে ওই ওয়ার্ডের কো অর্ডিনেটর দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত ২৬ শে এপ্রিল প্রযুক্তিগত কারণের জন্য কোউইন অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হয়নি ওই দিন যারা টিকা নিয়েছেন তাদের নথি। তবে তাদের হাতে একটি স্লিপ দেয়া হয়েছে। যে স্লিপ-এর মধ্যে ঐদিন টীকাকরণ যাদের হয়েছে তাঁদের সব ধরনের নথি লিপিবদ্ধ আছে। সেই লিপিবদ্ধ নথি অনুযায়ী প্রথম ডোজ যারা নিয়েছেন আগামী দিনে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। এর জন্য নতুন করে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে জানান ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর দেবাশিসবাবু। তিনি আরো বলেন ইতিমধ্যেই প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে তারা জানিয়েছেন দ্বিতীয়বার টিকা নেওয়ার সময় সার্টিফিকেট পেতে কোন সমস্যা হবে না।
তবে পুরসভা সূত্রে খবর, পুরসভার যেসব ক্যাম্প থেকে এই টিকা দেওয়া হয়েছিল সেখানে শুধু কোভিশিল্ড টিকাই দেওয়া হয়েছে। অন্য কোনও টিকা দেওয়া হয়নি। আর যারা ভ্যাকসিন নিয়ে এখনও সার্টিফিকেট পাননি, তাঁরা সবাই এপ্রিল, মে মাসে টিকা গ্রহণ করেছিলেন। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁদের মধ্যে অনেকে।
এদিকে কো-উইন অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন না হলে কলকাতা পুরসভা যে বিকল্প পদ্ধতির কথা চিন্তাভাবনা করছে। তবে কসোভো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পর কলকাতা পুরসভার বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তায় সাধারন মানষ। তাদের প্রশ্ন
রাজ্যের মধ্যে মান্যতা পেলেও আন্তর্জাতিক স্তরে বা অন্য রাজ্যে কতটা মান্যতা পাবে তো? তবে পুরসভা এখন কীভাবে গোটা বিষয়টিকে সামাল দেবে সেটাই এখন দেখার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন