দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে ‘ধনীদের উপর কর বাড়ানোর’ পক্ষে মত দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, ধনী-গরিবের মাঝে অসাম্য কমিয়ে আনার জন্য- এটি কার্যকারী পন্থা বলে দাবি করেছেন তিনি।
শনিবার দিল্লিতে ‘ভাল অর্থনীতি, খারাপ অর্থনীতি’ শীর্ষক একটি আলোচনাসভায় যোগ দিয়েছিলেন অভিজিৎ। সেখানে উন্নয়নের অর্থনীতি, অর্থনীতির বাস্তবোচিত মডেল, জীবনধারণের খরচবৃদ্ধি, সামাজিক সুরক্ষা, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
এই আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারতে একটি প্রচলিত রেওয়াজ আছে - যেকোনও নির্বাচনের আগে গরিবদের সামান্য কিছু উপহার দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করা হয়। এই প্রবণতা অত্যন্ত খারাপ। এই সামান্য উপহারে গরিবের কোনও কল্যাণ হয় না। উপরন্তু, দেশের উন্নয়নও স্তব্ধ হয়ে যায়। তাই, এটিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে।’
এদিন, নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ জানান, ‘দরিদ্রদের ঋণ মকুব করার বিষয়টি পুরানো। তবে, বড় ঋণগ্রহীতারা (কর্পোরেটরা) কেউ দরিদ্র নন। ফলে, দেশের উন্নয়নের একটি কার্যকরী এবং উন্নততর পদ্ধতি হল- ধনীদের উপরে করের ভার বাড়ানো।' রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে খুব সহজেই ধনী ও গরীবের অসাম্য দূর করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'আমাদের সমাজে যে অসাম্য রয়েছে, তা বেলুনের মতো ফুলেই চলেছে। এই অসাম্য দূর করতে ধনীদের কাছ থেকে বেশি পরিমাণে কর নেওয়া যেতে পারে। সেই করের টাকা সরকারি তহবিলে জমার পর, সেই টাকা শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে গরিব গরীব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে কেন্দ্র। তবে, এ জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।’
পাশাপাশি, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হল- সরকারি চাকরির মোহ থেকে ভারতে বেকারত্ব বৃদ্ধি। তিনি বলেন, 'স্বপ্নের সরকারি চাকরির ধারণা ভারতের একটা বড় অংশের মানুষের মনে এতটাই প্রবল যে- এর ফলে আমাদের বহু প্রতিভা নষ্ট হচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান উদ্দেশ্য হল সরকারি চাকরি পাওয়া। তবে, ৯৮ শতাংশই তা পায় না। তা থেকে বিপুল সংখ্যক বেকারের জন্ম হচ্ছে।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন