ফের বড়োসড়ো দুর্নীতির অভিযোগ উঠল ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে। অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত আছেন প্রাক্তন এমডি-সিইও চিত্রা রামকৃষ্ণ। একইসঙ্গে পাওয়া গেল বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্ত চালিয়ে সম্প্রতি এই মামলায় রিপোর্ট পেশ করেছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি।
১৯০ পাতার রিপোর্টে জানা গিয়েছে, উচ্চপদস্থ কর্তার নিয়োগ, তারপর তাঁর পদোন্নতি, কোনওটাই মেধা বা কর্মক্ষমতার ভিত্তিতে হয়নি। তা হয়েছে হিমালয়ের এক সাধুর কথা মেনে। ওই সাধুর কথা মেনেই সব কাজ করেছিলেন এমডি চিত্রা। এই অনিয়মের জন্য ইতিমধ্যে চিত্রাকে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কী ঘটেছিল? এনএসই-র গ্রুপ অপারেটিং অফিসার ও এমডি-র উপদেষ্টার পদে চিত্রা রামকৃষ্ণ নিয়োগ করেন আনন্দ সুব্রহ্মণ্যনকে। দ্রুত তাঁর পদন্নতিও হয়। তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন। কিন্তু জানা গিয়েছে, উচ্চ পদে থাকলেও সুব্রহ্মণ্যনের আদৌ তেমন অভিজ্ঞতা ছিল না। তাঁর কেরিয়ারে এনএসই-র আগে তিনি বামার লরিতে বেতন পেতেন খুবই কম। বছরে ১৫ লক্ষ টাকারও কম। কিন্তু এখানে তাঁর গডফাদার হয়ে ওঠেন চিত্রা। তাঁর সহায়তায় রাতারাতি তাঁর বেতন হয় বছরে ১.৬৮ কোটি টাকা। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় বছরে ৪.২১ কোটি টাকা।
এ তো গেল পদ ও আর্থিক সুবিধার কথা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই সবটাই হয়েছে হিমালয়ের এক সাধু শিরোমণির পরামর্শে। এমনটাই দাবি করেছেন চিত্রা। সেবিকে চিত্রা আরও জানিয়েছেন, তিনি ওই সাধুর সঙ্গে এনএসইর আর্থিক ও ব্যবসার গোপন তথ্য নিয়েও আলোচনা করতেন। এমনকী কর্মীদের কাজের মূল্যায়নও করতেন সাধুর কথা মেনেই।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এনএসই-র এমডি-সিইও ছিলেন চিত্রা রামকৃষ্ণ। তাঁর আমলে এনএসইতে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত নামে সেবি।
সম্প্রতি সেই রিপোর্টই প্রকাশিত হয়েছে। তা থেকেই জানা গিয়েছে, গত ২০ বছর ধরে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে ও কাজের বিষয়ে হিমালয়ের ওই সাধুর পরামর্শ মেনেই চলতেন চিত্রা রামকৃষ্ণ। জানা গিয়েছে, শিরোমণির আবাসস্থল হিমালয়। কিন্তু তাঁর নির্দিষ্ট বাসস্থান নেই। চাইলেই সবখানেই প্রকট হতে পারেন বাবাজি, দাবি চিত্রার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন