আনন্দ সুব্রাহ্মনিয়ানই কি চিত্রা রামকৃষ্ণর সেই রহস্যময় ‘যোগীবাবা’? এই রহস্য ক্রমশ দানা বাঁধছে তদন্তকারী অফিসারদের। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ জালিয়াতি মামলায় তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই)। সূত্র অনুসারে তদন্তকারী আধিকারিকরা আরও প্রমাণ পেয়েছেন যে রহস্যময় "হিমালয় যোগী", যার পরামর্শের ওপর নির্ভর করতেন তৎকালীন বোর্ড প্রধান চিত্রা রামকৃষ্ণ। সূত্র অনুসারে, NSE-এর প্রাক্তন গ্রুপ অপারেটিং অফিসার আনন্দ সুব্রামানিয়ান হয়তো সেই রহস্যময় ‘যোগীবাবা’।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সুব্রাহ্মানিয়ানের মোবাইল ডিভাইসের কয়েকটি অবস্থান নিয়ে খোঁজ চালিয়েছিলো সিবিআই। দেখা গেছে এই সমস্ত অঞ্চল সুব্রহ্মনিয়ানের চেন্নাইয়ের বাসভবনের কাছাকাছি।
সূত্র অনুসারে, "কিছু ইলেকট্রনিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা সন্দেহ করছি যে সুব্রহ্মনিয়ান যোগী হিসাবে পাঠানোর আগে ইমেলগুলি সম্পাদনা করতেন। আমরা বর্তমানে তার বিবৃতি রেকর্ড করছি।"
সিবিআই সূত্র জানিয়েছে যে যোগীকে পাঠানো ইমেলগুলি আনন্দ খুলতে পারতেন। তাই সন্দেহ করা হচ্ছে যে তারা একই ব্যক্তি হতে পারে। যদিও তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনো কিছু নিশ্চিত করা হয়নি।
জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেপ্তার হওয়া সুব্রাহ্মানিয়ানকে ৬ মার্চ পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। সিবিআই দিল্লির এক আদালতকে জানিয়েছে বাজেয়াপ্ত করা নথি এবং মামলার সাথে জড়িত অন্যদের সাথে তার মুখোমুখি হওয়ার জন্য তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।
একটি সূত্র আইএএনএসকে জানিয়েছে, এর আগে চেন্নাইতে তাঁর বিবৃতি টানা তিন দিন ধরে রেকর্ড করা হয়। যদিও সেইসময় একাধিক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছিলেন আনন্দ।
NSE এর তৎকালীন সিইও এবং এমডি রামকৃষ্ণ নিয়ে এসেছিলেন সুব্রাহ্মনিয়ানকে। জানা গেছে, যে ইমেলগুলি "হিমালয় যোগী" কে পাঠানো হয়েছিল এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করা হয়েছিল সেই ইমেলগুলি খুলতে পারতেন সুব্রহ্মনিয়ান।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, CBI-এর অন্য একটি দল মুম্বাইতে SEBI অফিসে অনুসন্ধান করেছে এবং বেশ কিছু অপরাধমূলক নথি, প্রমাণ এবং ডিজিটাল নথি উদ্ধার করা হয়েছে। সিবিআই ১৯ ফেব্রুয়ারী এনএসই ডিরেক্টর রবি নারাইনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, যিনি রামকৃষ্ণের আগে এই পদে ছিলেন।
সিবিআই সূত্র অনুসারে "নারায়ণকে তদন্তে যোগ দিতে বলে সমন পাঠানো হয় এবং তিনি সেই সমনের জবাব দেন। এরপর তাঁকে দিল্লি অফিসে ডেকে জেরা করা হয়। তিনি এই মামলার একজন সন্দেহভাজনও।" সিবিআই সূত্র আরও জানিয়েছে, তিনি অনেক প্রশ্ন "এড়াতে চেষ্টা করেছিলেন" এবং তাঁর বিরুদ্ধে LOC বন্ধ করার অনুরোধও করেছিলেন।
রামকৃষ্ণকে সম্প্রতি মুম্বাইতে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তাকে প্রায় ৫০টি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়। যার মধ্যে ছিলো, তিনি "যোগী"কে কতদিন ধরে মেইল পাঠাচ্ছেন, তাঁকে কি শ্রেণীবদ্ধ তথ্য ভাগ করে নেওয়ার জন্য কোনও কাটমানি দেওয়া হয়েছিল এবং যদি দেওয়া হয় সেই অর্থ তিনি কোথায় বিনিয়োগ করেছিলেন?
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন