মোদী সরকারের আমলে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তুকির পরিমাণও বেড়েছে। পুনের প্রফুল সারদা নামের এক সমাজকর্মীর করা আরটিআই-এর জবাবে এমন তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
ভারতের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হল জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়। মূলত বামপন্থী ছাত্রছাত্রীদের ঘাঁটি বলেই দেশে পরিচিতি এই বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বা শাসকের কোনো 'ভুল' নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। কানহাইয়া কুমার, উমর খালিদ, ঐশী ঘোষের মতো পড়ুয়ারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদে সামিল হয়ে জাতীয় রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।
জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আরটিআই করেন আরটিআই কর্মী প্রফুল সারদা। আরটিআই-র মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, ২০০৪-০৫ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৪-১৫ সালের মধ্যে ভর্তুকি হিসেবে ২০৫৫ কোটি পেয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়। এই সময় কেন্দ্র সরকারে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ ২। আর ২০১৫-১৬ এবং ২০২২-২৩ সালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে ৩০৩০ কোটির ভর্তুকি দেওয়া হয়। অর্থাৎ মোদী জমানায় ১.৫ গুন অধিক ভর্তুকি পেয়েছে জেএনইউ।
ভর্তুকি বৃদ্ধির পাশাপাশি বিজেপি সরকারের আমলে জেএনইউ-তে মামলা দায়েরের সংখ্যাও বেড়েছে। আরটিআইতে জানা যায় ২০১৬ সালের আগে কোনও এফআইআর হয়নি। কিন্তু তারপর থেকে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের বিরুদ্ধেই ৩৫টি এফআইআর দায়ের করেছে।
এই এফআইআর নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে প্রফুল সারদাকে। তিনি নিজেই একথা জানিয়েছেন। এই রিপোর্টকে অসম্পূর্ণ বলে দাবি করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, "২০১৬ সালে, JNU-এর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৩৫টি FIR দায়ের করেছিল পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। আরটিআই-এ পড়ুয়াদের নাম বা বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। আরও অনেক প্রশ্নের উত্তর দেয়নি কর্তৃপক্ষ। আমি আশা করছি কেন্দ্রীয় জন তথ্য আধিকারিক (CPIO) অবিলম্বে আমার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন।"
তিনি আরও জানান, আশা করবো এই ধরণের ঘটনা যেন আর না ঘটে। আর আমাদের দেশে আরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন রয়েছে। অনেক পড়ুয়া আছে যারা গ্রাম থেকে শহরে এসে পড়তে পারেন না। জেএনইউ-র মতো অন্যান্য বিশ্ব বিদ্যালয়গুলিকেও ভর্তুকি দেওয়া উচিত। যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নতি হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন