ভারতে ২০২০ এবং ২০২১ সালে বিরাট সংখ্যক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। একইসঙ্গে নষ্ট হয়েছে বহু কাজের সময়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ‘গ্লোবাল এমপ্লয়মেন্ট ট্রেন্ডস ফর ইউথ ২০২২’ রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষা অনুসারে, কোভিড এবং কোভিড পরবর্তী সময়ে অন্য যে কোনো বয়সী কর্মপ্রার্থীদের তুলনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তরুণরা।
বৃহস্পতিবার সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এই তথ্য উদ্ধৃত করে এক ট্যুইট বার্তায় অবিলম্বে ১০ লক্ষ সরকারি শূন্যপদ পূরণ করার দাবি জানিয়েছেন। গতকালের ট্যুইটে সীতারাম বলেন, ‘মোদী সরকার তার দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না। সাধারণ মানুষের সংগ্রাম মোদী সরকারকে তাঁদের দাবি পূরণে বাধ্য করবে।
ওই ট্যুইটে সীতারাম আরও বলেন, মনরেগার (MGNREGA) বরাদ্দ অবিলম্বে বৃদ্ধি করুন এবং দীর্ঘ বকেয়া মজুরি প্রদান করুন। এছাড়াও শহরের জন্য একটি গ্যারান্টিযুক্ত কর্মসংস্থান প্রকল্প প্রণয়ন করুন।
প্রসঙ্গত, আইএলও-র সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, কোভিড এবং কোভিড পরবর্তী সময়ে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণরা কর্মক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য যে কোনো বয়সসীমার তুলনায় সব থেকে বেশি কাজ হারিয়েছেন এই বয়সী শ্রমিকরা। ওই রিপোর্ট অনুসারে, ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী কর্মহীন যুবকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩ মিলিয়ন বা ৭ কোটি ৩০ লক্ষ। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৫ মিলিয়ন বা ৭ কোটি ৫০ লাখ। যদিও ২০১৯-এর তুলনায় এখনও এই সংখ্যা ৬ মিলিয়ন বা ৬০ লক্ষ বেশি।
ওই সমীক্ষায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে বেকারত্বের হার ১৪.৯ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে। ভারত প্রসঙ্গে ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ ১৮ মাস স্কুল বন্ধ থাকার কারণে প্রায় ২৪ কোটি শিশু, কিশোর-কিশোরী স্কুলে যেতে পারেনি। যাদের মধ্যে গ্রামীণ ক্ষেত্রে মাত্র ৮ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে মাত্র ২৩ শতাংশ ছাত্রছাত্রীর কাছে অনলাইন শিক্ষা গ্রহণের পরিকাঠামো ছিল। ফলত অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে গ্রামাঞ্চলে প্রায় ৯২ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে প্রায় ৭৭ শতাংশ ছাত্রছাত্রী শিক্ষার কোনো সুযোগ পায়নি। যা সামাজিক স্তরে বিরাট বৈষম্য সৃষ্টি করেছে।
রিপোর্ট জানাচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে বহু ছাত্র ছাত্রীই আগে যা শিখেছিল তা ভুলে গেছে এবং বহু ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে শিক্ষার অনীহা তৈরি হয়েছে। ভারতের ক্ষেত্রে ৯২ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ভাষার ক্ষেত্রে কমপক্ষে একটি মৌলিক দক্ষতা হারিয়েছে এবং প্রায় ৮২ শতাংশ ছাত্রছাত্রী অঙ্কের ক্ষেত্রে অন্তত একটি মৌলিক দক্ষতা হারিয়েছে।
আইএলও-র রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ভারতে গৃহ সহায়িকার কাজ একটি অস্বীকৃত কাজ। যে কাজে মজুরি অত্যন্ত কম এবং প্রচুর অল্পবয়সী মহিলা ও যুবতীরা এই পেশায় যুক্ত। বহু জায়গাতেই এঁরা শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন