অবশেষে গ্রেপ্তার করা হল কানপুরের সুগন্ধী ব্যবসায়ী পীযূষ জৈনকে। রবিবার গভীর রাতে জিএসটি ফাঁকি দেবার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কানপুর এবং কনৌজ-এর বাড়ি থেকে নগদ ২৮৪ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে থরে থরে সাজানো নোট-এর ছবি প্রকাশ্যে আসার পর তিনি সংবাদ শিরোনামে আসেন।
ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ জিএসটি ইন্টালিজেন্স (ডিজিজিআই) আহমেদাবাদ তাঁর বাড়ি এবং কারখানা থেকে আরও ১০ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে। সরকারি সূত্র অনুসারে তিনি উত্তরপ্রদেশের কনৌজের ওডোকেম ইন্ডাস্ট্রির মালিক। তাঁর বাড়ি এবং কারখানা থেকে বিশাল পরিমাণে চন্দনকাঠের তেল, সুগন্ধি তেল উদ্ধার করা হয়েছে।
পীযূষ জৈন-এর বাড়ি এবং কারখানা ছাড়াও তল্লাসি চালানো হয়েছে এক পরিবহণ সংস্থার অফিসেও। কানপুরের মেসার্স গণপতি রোড ক্যারিয়ার্স-এর অফিসেও তল্লাসি চালানো হয়।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি)-এর চেয়ারম্যান বিবেক জহুরি জানিয়েছেন, এটাই সেন্ট্রাল সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি)-এর ইতিহাসে সবথেকে বড়ো উদ্ধার অভিযান।
ডিজিজিআই সূত্র অনুসারে গত শুক্রবার শুরু হওয়া এই তল্লাশি অভিযানে কানপুরের আনন্দনগরে পীযূষ জৈনের বাড়ি থেকে নগদ ১৭৭ কোটি টাকা এবং কনৌজের বাড়ি থেকে নগদ ১০৭ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ এবং গুজরাটের ট্যাক্স আধিকারিকদের ৫০ জনের এক টিম এই তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে।
সূত্র অনুসারে পীযূষ জৈনকে এক অজ্ঞাত নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাঁকে কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁর কাছে তদন্তকারীরা যা যা প্রশ্ন করেন তিনি তার সদুত্তর দিতে পারেননি। এরপরেই তাঁকে কর ফাঁকি এবং বিভিন্ন সংস্থার নামে ভুয়ো বিল তৈরি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র অনুসারে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় জৈন জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি থেকে যে ২৮৪ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে তা তিনি সম্প্রতি সোনা বিক্রি করে পেয়েছেন। তাঁর পূর্বপুরষের গচ্ছিত ৪০০ কেজি সোনা তিনি সম্প্রতি বিক্রি করেছেন বলেও তাঁর দাবি।
কেন তিনি এই পরিমাণ সোনা বিক্রি করেছেন এই প্রশ্নের উত্তরে জৈন জানিয়েছেন, ব্যবসার সম্প্রসারণের জন্য তাঁর নগদ টাকার প্রয়োজন ছিলো। ডিজিজিআই-এর এক আধিকারিক জানান, জিজ্ঞাসাবাদে পীযূষ জৈন বলেছেন তিনি দফায় দফায় গত বেশ কয়েক বছর ধরে ছোটো স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে এই সোনা বিক্রি করেছেন।
পীযূষ জৈন-এর দাবির সত্যতা যাচাই করতে তাঁর কনৌজের পৈতৃক বাড়িতে তল্লাশি চালান তদন্তকারী অফিসাররা। সেখান থেকে ২৫০ কেজি রূপো এবং ২৫ কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়।
আয়কর দপ্তরের আধিকারিকদের সূত্র অনুসারে ব্যবসায়ীর বাড়ি এবং কারখানায় মোট ৩৬ জন জিএসটি ইন্টালিজেন্স এবং আয়কর আধিকারিকরা ছিলেন। তাঁর বাড়ি থেকে ৯টি বড়ো ড্রাম ভর্তি চন্দনকাঠের তেল এবং কার্ডবোর্ডের বাক্সে রাখা দু’হাজার টাকার নোটে এই টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই তল্লাশি এখনও শেষ হয়নি। পীযূষ জৈনের বাড়ির দেওয়ালে এখনও কোনো গোপন লকার থাকতে পারে। সেই লকারের সন্ধানে ইতিমধ্যেই স্থপতি এবং বিশেষজ্ঞদের এক দলকে লখনৌ থেকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তল্লাশি চালানোর সময় পীযূষ জৈনের বাড়ি থেকে বেশ কিছু ডায়েরি এবং বিল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
-With Agency Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন