পিএম-কেয়ারস ফান্ড ভারত সরকারের তহবিল নয়। এই ফান্ডে প্রাপ্ত অর্থ ভারতের কনসোলিডেটেড ফান্ডে যায় না। এই ফান্ডের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দিল্লি হাইকোর্টে এমনটাই জানানো হলো।
করোনা মোকাবিলায় আমজনতার কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য গতবছর প্রধানমন্ত্রীর নামে এই তহবিল গঠন করা হয়েছিল। এই দাতব্য ট্রাস্টের পুরো নাম Prime Minister's Citizen Assistance and Relief in Emergency Situation Fund। এই তহবিলের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তহবিলের ঠিকানাতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ঠিকানা দেওয়া রয়েছে। ওয়েবসাইটে নরেন্দ্র মোদীর ছবির সাথে জাতীয় প্রতীক অশোক স্তম্ভও রয়েছে। তহবিলের অছি পরিষদের সদস্য তালিকায় নাম রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীর।
সরকারের সমস্ত মন্ত্রকের কর্মী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মী, ব্যাঙ্কের কর্মীরা কয়েক কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন এই তহবিলে। তহবিলে অনুদান চেয়ে সরকারি খরচে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে। যদিও এতো কিছুর পরেও কেন্দ্রের দাবি এই তহবিল ভারত সরকারের নয়।
পিএম-কেয়ারস ফান্ডকে সংবিধানের ১২ নম্বর ধারার অধীনে 'দ্য স্টেট' ঘোষণা করার দাবিতে দিল্লি হাইকোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। পিটিশনে আবেদনকারী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীদের মতো ট্রাস্টিদের নিয়ে তৈরি তহবিলে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, যা দুঃখজনক।
এই পিটিশনের শুনানিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আন্ডার সেক্রেটারি প্রদীপ কুমার শ্রীবাস্তব আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে জানিয়েছেন, সংবিধানে তৈরি কোনো আইনে এই তহবিল তৈরি হয়নি। বাজেট থেকে কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়না এই তহবিলে। স্বেচ্ছায় অনুদান জমা হয় এখানে। তৃতীয় পক্ষের কাছে এর তথ্য প্রকাশ করা অনুমোদিত নয়।
তিনি আরো জানিয়েছেন, এই ট্রাস্টে অবৈতনিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। ট্রাস্ট স্বচ্ছতার সাথেই পরিচালিত হয়। CAG-এর প্রস্তুত প্যানেলের একজন চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দ্বারা অডিট করা হয়। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য অডিটেড রিপোর্ট ট্রাস্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত তহবিলের ব্যবহারের বিবরণের সাথে প্রকাশ করা হয়।
বিরোধীরা একাধিকবার এই ট্রাস্টের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। CAG দিয়ে ট্রাস্ট অডিটের দাবি তুলেছেন তাঁরা। ফান্ডের টাকা কোথায় কত খরচ হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে একাধিকবার। সরকারের তরফ থেকে বারবার দাবি করা হয়েছে এই তহবিল সরকারি নয়। তাই CAG দিয়ে অডিট করা সম্ভব নয়। তথ্যের অধিকার আইনের এই ফান্ড নিয়ে কোনো কপি প্রকাশ করেনি সরকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন