আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি, পড়ুয়াদের স্বার্থে জমি বরাদ্দ করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। সেই জমিতেই এখন নজর রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বহু প্রভাবশালী নেতার। শুধু নেতা নয়, সেই তালিকায় আছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রীও। এমনই অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হেনস্তা করা, চড় মারার হুমকি দেওয়ার যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তার মূল অভিযুক্ত ধৃত তৃণমূল কর্মী গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল সেই তালিকার একটা অংশের সঙ্গে যুক্ত। প্রকাশ্যে আসা একটি অডিও টেপে রাজ্যের মন্ত্রী, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী গোলাম রব্বানির নাম শোনা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক স্ট্রিট ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় হস্টেল ও খেলার মাঠের জন্য জমি পড়ে রয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও হস্টেল বা খেলার মাঠ হয়নি। সূত্রের খবর, চিত্তরঞ্জন হাসপাতালের পাশে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি জমি খেলার মাঠ ও হস্টেল করার জন্য চিহ্নিত করা হয়ছিল। অভিযোগ, সেই জমি বিক্রির জন্য বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়র ওপর।
এই চক্রান্তের বিরুদ্ধেই আন্দোলন করেন আনিস খান ও তাঁর সহপাঠীরা। উপাচার্য মহম্মদ আলিকে ‘তাড়াতে পারলে’ এই চক্রান্ত বাস্তবায়িত করা অনেক বেশি সহজ হবে মনে করেই তাঁকে মানসিক নির্যাতনের করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও সেই অডিওর সত্যতা বিচার করা হয়নি।
এদিকে নিগ্রহের চারদিন পর উপাচার্য মহম্মদ আলির কাছে ঘটনার রিপোর্ট চাইল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর সোমবারই এই ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন। রিপোর্ট চাইতে এত দেরি করায় স্পষ্ট যে, সরকার এই ঘটনা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে চায় না। এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। উপাচার্য ফের তাঁর পুরনো কর্মক্ষেত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে চান বলে সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন।
মূলত সংখ্যালঘু পরিবারের পড়াশোনার সুবিধার্থেই বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়। অথচ সেই সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী গোলাম রব্বানীর নামই উপাচার্যকে হেনস্থায় জড়িয়ে গিয়েছে। উপাচার্য গোটা ঘটনা চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, ফিরহাদ হাকিম, গোলাম রব্বানি, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরির মতো মন্ত্রীরা চাইছেন মহম্মদ আলিকে উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দিতে। কিন্তু ব্রাত্য বসু, পার্থ চ্যাটার্জির মতো মন্ত্রীরা চাইছেন তাঁকে ওই পদে রেখে দিতে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন