একদিকে করোনা মহামারী, তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং তার জেরে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে গিয়ে আমজনতার নাভিশ্বাস উঠে যাওয়া। এই হল গোটা দেশের সার্বিক আর্থিক চিত্র। খাবার ও ভ্যাকসিনের খরচ জোগাতেই পেট্রোল-ডিজেল দাম বাড়াতে হচ্ছে। এমনটাই জানালেন দেশের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
মহামারীর খরচ জোগাতে পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যে অর্থের জোগান পেট্রোল, ডিজেলের দাম বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে, তা কর্পোরেটের কর ছার ছাঁটাই করে তুলে নেওয়া যেত। বছরে যে হারে অনাদায়ী ঋণ মকুব করা হয়, তাতে রাশ টানলেই সবদিক নিয়ন্ত্রণ করা যেত। কিন্তু তা না করে জনতার ঘাড়েই বোঝা চাপানো হচ্ছে। ২০২০-২১ সালে কেন্দ সরকার পেট্রোপন্যে কর বাবদ সংরহ করেছে ৩.০১ লক্ষ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবর্ষের তুলনায় প্রায় ৬৪,০০০ কোটি বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় সামজিক খাতে ব্যয় করছে কোথায়?
২০১৯-২০-র অর্থবর্ষে সেপ্টেম্বরে বিনিয়োগ আনতে কর্পোরেটে কর কমিয়ে ৩০ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশ করা হয়। যদিও বিনিয়োগ কিছু আসেনি। কর ছাড়ের নামে কেন্দ্র বছরে গড়ে ১ লক্ষ কোটি টাকা কর্পোরেট কর ভর্তুকি দেয়। ২০১৯-২০ তে কেন্দ্র সরকার কর্পোরেট কর মকুব করেছে ৯৮ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে কর্পোরেটের অনাদায়ী বিল মকুব।
মহামারীতে চিকিৎসা খাতে খরচ কমিয়ে দিয়েছে মোদি সরকার। ২০২০-২১ অর্থ বর্ষে চিকিৎসা খাতে খরচ হয়েছে ৮৫ হাজার ২৫১ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থ বর্ষে বরাদ্দ কমে হয়েছে ৭৬ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। তবে ঘোষণার সময় স্বাস্থ্য বাজেটে পানীয় জল, স্যানিটাইজেশন ও ভ্যাকসিন খাতের পৃথক খরচ যুক্ত করে স্বাস্থ খাতে খরচ বলে চালানো হয়।
স্বাস্থ্য খাতে এভাবে খরচ বাড়লেও প্রকৃত অর্থে বরাদ্দ কমে গিয়েছে। ভ্যাকসিন বাবদ ৩৫ হাজার কোটি বরাদ্দ হয়েছে। অর্থাৎ মহামারীর স্বাস্থ্য খাতে ১ লক্ষ কোটি টাকাও বরাদ্দ হচ্ছে না। খরচ জোগাতে যে কর বসানো হচ্ছে, সেই হারে জনকল্যাণে খরচ বাড়ছে না। উপরন্তু মহামারীতে কালোবাজারি, লুট হয়েছে প্রবল ভাবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন