ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেপো রেট বাড়িয়েছে। যার ফলে হোম লোন গ্রহীতাদের মাসিক কিস্তি (ইএমআই) আগামী একমাসের মধ্যে বাড়তে চলেছে। বিভিন্ন গৃহঋণ সংস্থার আধিকারিকদের পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়েছে। বুধবার, আরবিআই রেপো রেট ৩৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে।
রেপো রেট হল সেই হার যে হারে আরবিআই বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়। হাউজিং ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি ক্রেতাদের ঋণ দেয়।
এই অর্থবছরে, আরবিআই রেপো রেট ২.২৫ শতাংশ বাড়িয়েছে এবং হাউজিং লোন সংস্থাগুলি তাদের ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে এই বর্ধিত হার নেবে।
সেক্ষেত্রে কী প্রভাব পড়তে পারে একজন গৃহঋণ গ্রহীতার উপর?
এই প্রসঙ্গে ন্যাশনাল ট্রাস্ট হাউজিং ফাইন্যান্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও অলোক আগরওয়াল আইএএনএসকে জানিয়েছেন, "যদি একজন ব্যক্তি এই বছরের শুরুতে ৮ শতাংশ হারে আবাসন ঋণ হিসাবে ১ লাখ টাকা ধার নেন, তাহলে প্রতি মাসে ইএমআই প্রায় ৮৩৫ টাকা হয়৷ ২.২৫ শতাংশ সুদের হার বৃদ্ধির সাথে সাথে ওই ব্যক্তির ইএমআই বেড়ে প্রতি মাসে হবে প্রায় ৯৬৫ টাকা।"
আগরওয়ালের মতে, ২.২৫ শতাংশ সুদের হার বৃদ্ধির ফলে ৩০ লক্ষ টাকার ২০ বছরের ঋণের ক্ষেত্রে, ১০ শতাংশ সুদের হারে EMI প্রায় ২৯ হাজার টাকা হবে।
সুন্দরম হোম ফাইন্যান্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডি. লক্ষ্মীনারায়ণের মতে, ৩৫ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট বৃদ্ধিতে ২০ বছরের ঋণে প্রতি লক্ষের জন্য ২৩ টাকা করে বাড়বে। তিনি আইএএনএস-কে জানিয়েছেন, "আমি মনে করি না এটি গৃহঋণের চাহিদাকে কমিয়ে দেবে।”
নাইট ফ্রাঙ্ক ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিশির বৈজলের মতে, ১৯০ bps রেপো রেট বৃদ্ধির মধ্যে (বুধবার হার বৃদ্ধির আগে), ১০৫ bps বৃদ্ধি ইতিমধ্যে ফান্ড ভিত্তিক ঋণের হারের প্রান্তিক ব্যয়ে (MCLR) স্থানান্তরিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, "MCLR-এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে বন্ধকের হার বেড়েছে এবং গত ছ’মাসে বাড়ি বিক্রয়ের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধিতে ধীরগতির কিছু লক্ষণ শুরু হয়েছে।"
তিনি বলেন, সুদের হার বৃদ্ধির এই চক্র শুরু হওয়ার পর থেকে বাড়ি ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতাও ১০ শতাংশ কমেছে।
বিশেষজ্ঞরা এই প্রসঙ্গে জানাচ্ছেন, গৃহ ঋণ গ্রহীতারা কম সুদের হারে অন্য ঋণদাতার কাছে ঋণ পরিবর্তন করার বিকল্পটি দেখতে পারেন বা ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে পারেন, যার ফলে ইএমআই কোয়ান্টাম কমবে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ফ্লোটিং রেট ঋণগ্রহীতাদের যদি ভালো ঋণ শোধের রেকর্ড থাকে সেক্ষেত্রে ঋণদাতা পরিবর্তন করা সহজ হবে।
সম্প্রতি ঋণ নেওয়া ঋণগ্রহীতাদের ওপর এর প্রভাব বেশি পড়বে এবং তাদের বেতন বৃদ্ধির দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। অন্যদিকে, যারা বেশ কয়েক বছর আগে গৃহঋণ নিয়েছিলেন, তাদের জন্য হার বৃদ্ধির কোনও বড় প্রভাব নাও হতে পারে। কারণ ইতিমধ্যে তাদের বেতন বৃদ্ধি হতে পারে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন