ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তালিকা থেকে ৩৮৭ জন মোপালা বিদ্রোহীদের নাম বাদ দেবার ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জানালেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিকাল রিসার্চের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এম জি এস নারায়ণ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং আইসিএইচআর প্রকাশিত ‘ডিকশনারি অফ ইন্ডিয়াস ফ্রীডম স্ট্রাগল’ নামক গ্রন্থ থেকে মোপালা বিদ্রোহের নেতা ভি কে হাজি এবং আলি মুসালিয়ার সহ ৩৮৭ জন মোপালা বিদ্রোহীদের নাম বাদ দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইসিএইচআর-এর ২০০১-০৩ সময়কালের চেয়ারম্যান নারায়ণন জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছাড়া অন্য কিছু নয়। ৮৮ বছরের বৃদ্ধ ঐতিহাসিক নারায়ণন বলেন, যে ঘটনা ভুলে যাওয়া উচিৎ নয় সেই ক্ষেত্রে এই ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
সম্প্রতি তিন সদস্যের এক প্রতিনিধিদল মোপালা বিদ্রোহের বিষয়ে পর্যালোচনা করার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিনিধিদলের বক্তব্য অনুসারে, মোপালা বিদ্রোহ স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশ নয়। বরং এই ঘটনার পেছনে ধর্মীয় কারণ ছিলো।
ঘটনাচক্রে, কয়েকদিন আগেই মোপালা বিদ্রোহ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন আরএসএস নেতা রাম মাধব। মোপালা বিদ্রোহের উল্লেখ করে ওইদিন রাম মাধব বলেন, দেশের নেতৃত্ব প্রকৃত ইতিহাসের বিষয়ে ওয়াকিবহাল। কাশ্মীর হোক অথবা কেরালা - এখানে কোনো তালিবানি অথবা বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে হিংসা ছড়িয়ে দেশের মানুষকে ভাগ করতে দেওয়া হবেনা।
১৯২১ সালের মোপালা বিদ্রোহকে মালাবার বিদ্রোহও বলা হয়। ইতিহাস অনুসারে কেরালার মোপালা মুসলিমরা এই বিদ্রোহ করেছিলেন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এবং তাঁদের অনুগত হিন্দুদের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ ৬ মাস ব্যাপী এই সংগ্রামে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো। যাদের মধ্যে ২,৩৩৯ জন বিদ্রোহী ছিলেন।
দীর্ঘ সময় ধরে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মোপালা বিদ্রোহের কারণ নিয়ে মতভেদ আছে। গত সপ্তাহে কোঝিকোড়ে এই বিষয়ের উল্লেখ করেছিলেন আরএসএস নেতা রামমাধব। তিনি মোপালা বিদ্রোহের দরুণ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। দীর্ঘসময় ধরে আরএসএস বিজেপির পক্ষ থেকে মোপালা বিদ্রোহকে কেরালায় জেহাদী কার্যকলাপ বলে অভিহিত করা হয়।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন