ক্রেতা মূল্যসূচকের রিপোর্ট অনুসারে, মোদী সরকারের আমলে বিগত ৮ বছরের মধ্যে এবছর মূল্যবৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ। এপ্রিল মাসেও মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৭৯ শতাংশ যা বেড়ে হয়েছে ৮.৩৩ শতাংশ। মার্চে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৬.৯৫ শতাংশ। গত বছর এপ্রিলে যা ছিল ৪.২৩ শতাংশ।
গ্রামাঞ্চলে মূল্যবৃদ্ধির হার এপ্রিল মাসে হয়েছে ৮.৩৮ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ৭.৬৬ শতাংশ। গত বছরের এপ্রিলে ছিল ৩.৭৫ শতাংশ। শহরে মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.০৯ শতাংশ। যা মার্চে ছিল ৬.১২ শতাংশ। গত বছরের এপ্রিলে ছিল ৪.৭১ শতাংশ।
খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির হার মার্চে ছিল ৭.৬৮ শতাংশ। যা এপ্রিলে বেড়ে হয়েছে ৮.৩৮ শতাংশ। যা গত বছরের এপ্রিলে ছিল ১.৯৬ শতাংশ। এর থেকেই স্পষ্ট, খাদ্যপণ্যের উপর মূল্যবৃদ্ধির হার একলাফে অনেকটাই ছাড়িয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ভোজ্য তেলে। রিপোর্ট অনুসারে, এপ্রিল মাসের হার ১৭.২৮ শতাংশ। শাকসবজির ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ১৫.৪১ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ১১.৬৪ শতাংশ। মশলা এবং জ্বালানির দাম বেড়েছে যথাক্রমে ১০.৫৬ শতাংশ এবং ১০.৮০ শতাংশ হারে।
সূত্রের খবর, মূল্যবৃদ্ধির এই হার চলছে বিগত চারমাস ধরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্ধারিত সীমারেখার ৬ শতাংশের বেশিতে। যার ফলে সুদের হার কমানোর ফলে তা আরও বেড়েছে।
বিগত কয়েকমাস ধরেই দেশজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে। এর মাঝেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক তাঁদের রিপোর্টে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে আরও মূল্যবৃদ্ধি ঘটার ইঙ্গিত দিলো। মূল্যবৃদ্ধির চাপে রান্নার গ্যাসের দাম ইতিমধ্যেই হাজার ছুঁয়েছে। পেট্রোল-ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানির দামও ক্রমাগত বাড়ছে। সাথে বাড়ছে খাদ্যদ্রব্যের দাম। বাদ যাচ্ছে না ভোজ্য তেল থেকে শুরু করে শাক-সবজি ইত্যাদিও।
সরকারের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব মূলত বেশি পড়ছে উচ্চ আয়ের মানুষদের উপর। নিম্ন আয়ের মানুষের উপর এর প্রভাব তূলনামূলক কম। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যানে প্রতিটি জিনিসের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি দেখে অর্থনীতিবিদদের মনে প্রশ্ন, নিম্ন আয়ের মানুষদের উপর মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কম কিসের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের দাবী, মূল্যবৃদ্ধির পিছনে মূলত বিশ্ব অর্থনীতির বেসামাল পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চীনের লকডাউন প্রধানত দায়ী। অন্যদিকে পেট্রোপণ্যের উপর কেন্দ্রের কর ও সেসের বিপুল বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের রিপোর্টে কিছু বলা হয়নি। পাশাপাশি রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির গতি খুবই ধীর। এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এলেও উৎপাদন ও কর্মসংস্থানে ভাটা পড়তে পারে তা স্পষ্ট।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন