তথ্যের অধিকার (RTI) আইনে আবেদন করে মেলেনি উত্তর। জমেছে অভিযোগের স্তূপ। সারাদেশে একই অবস্থা। কেন্দ্র এবং বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ২৬ টি তথ্য কমিশন আছে। আর, সেখানে জমে আছে প্রায় ৩ লক্ষ ১৪ হাজারের অধিক আবেদন এবং অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ৪ টি তথ্য কমিশন চলছে কোনও ‘চিফ ইনফরমেশন অফিসার (CIO) ছাড়াই।
‘তথ্য’ পাওয়া মানুষের অধিকার। আর সেই অধিকার ফিরিয়ে দিতে ২০০৫ সালের ১২ অক্টোবর সারাদেশে চালু হয়েছিল তথ্যের অধিকার আইন (RTI Act)। কিন্তু, আইন প্রয়োগের ১৭ বছরের মাথায় দেখা যাচ্ছে- মানুষ সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ নাগাদ- ২৬ টি তথ্য কমিশনে জমে থাকা আবেদন ও অভিযোগের সংখ্যা ছিল- ২ লক্ষ ১৮ হাজার ৩৪৭ টি। সেই সংখ্যা- ২০২১ সালের ৩০ জুন নাগাদ দাঁড়ায় ২ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩২৫ টি। আর, এক বছরের ব্যবধানে (৩০ জুন ২০২২) সেই সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ লক্ষ ১৪ হাজারে।
গত ১১ অক্টোবর- এই তথ্য সামনে এনেছে দিল্লির সাতারক নাগরিক সংগঠন (Satark Naagarik Sangathan)। এই রিপোর্ট কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার উদয় মাহুরকার (Uday Mahurkar)-এর কাছে এসে পৌঁছেছে। তাঁর পরেই দিল্লিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন নিয়ে দিল্লির আম আদমি পার্টি (AAP) সরকারের "ব্যর্থতার" কথা তুলে ধরে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা (Lt Governor V K Saxena)-কে চিঠি দিয়েছেন উদয় মাহুরকার।
সূত্রের খবর, এরপরে, দিল্লির মুখ্য সচিবকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সচিবালয়। তবে, এ নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য করেনি দিল্লি সরকার।
তথ্য কমিশনে শূন্যপদ
গত মঙ্গলবার, RTI-নিয়ে যে তথ্য সামনে এসেছে- তাতে জানা যাচ্ছে, সেন্ট্রাল ইনফরমেশন কমিশনে (CIC)- কমিশনারের পদে ৩ টি শূন্যপদ রয়েছে। আর বর্তমানে, কেন্দ্রীয় স্তরে প্রায় ২৬ হাজার ৮০০ টি মামলা ঝুলে রয়েছে। দীর্ঘদিন এই সংখ্যক মামলার (অভিযোগের) কোনও নিষ্পত্তি হয়নি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে- সেন্ট্রাল ইনফরমেশন কমিশনে (CIC) কমিশনারের পদে ৪ টি শূন্যপদ। কেন্দ্রীয় সরকারকে তিন মাসের মধ্যে সমস্ত শূন্যপদ পূরণ করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে- শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশকে গুরুত্ব সহকারে নেয়নি কেন্দ্রের মোদী সরকার।
এছাড়া, ঝাড়খণ্ড এবং ত্রিপুরায়, রাজ্য তথ্য কমিশনাররা পদত্যাগ করার পর সেখানে নতুন কোনও নতুন কমিশনার নিয়োগ করা হয়নি। অন্যদিকে, মণিপুর, তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে কোনও তথ্য কমিশনার ছাড়াই চলছে- রাজ্য তথ্য কমিশন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন