ফের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামীর মৃত্যু নিয়ে কেন্দ্রকে সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'খোঁজ নিয়ে দেখুন, কত মানুষকে এই সময় বিনা বিচারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এই কর্তৃত্ববাদী শক্তি কত মানুষের মুখ বন্ধ করে রেখেছে।' গণতন্ত্র আরও মজবুত হওয়ার প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন - 'গণতন্ত্র মানেই শুধু ভোটদান নয়। উন্মুক্ত মন ও বাকস্বাধীনতা এবং নিজের মতামত ব্যক্ত করাও গণতন্ত্র।'
স্ট্যান স্বামীর প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন বলেন, 'গরিবের জন্য রাত-দিন তিনি কাজ করতেন। তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে আইনের অপব্যবহার করে তাঁর জীবনকে আরও কঠিন করে তোলা হয়েছিল। ফলে তাঁর জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।'
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে অর্থনীতিবীদ বলেন, 'গণতন্ত্রে দুর্ভিক্ষ হয় না। ১৯৪৩ সালে যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, তখন ব্রিটিশ রাজ চলছিল। সরকারের সমালোচনা করার অধিকার ছিল না সংবাদমাধ্যমের। কেউ খোলাখুলি আলোচনা করলেই তার জেল হয়ে যেত। যদি সাধারণ মানুষ বা সংবাদমাধ্যম সত্যি সমালোচনা করতে পারত সরকারের, তাহলে দুর্ভিক্ষের দিকে নজর দিতেন দেশবাসী।'
প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদের মতে, এই অতিমারী পরিস্থিতিতেই প্রশাসন এবং হাজার মানুষের মধ্যে আলোচনার যোগ সূত্র গড়ে ওঠা উচিত। কিন্তু তা হয়নি। প্রথমে যখন লকডাউন হল, গরিবদের বিষয়টি উপেক্ষিতই রয়ে গেল। পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রসঙ্গ টেনে তাঁর অভিমত, 'যদি গোটা দেশজুড়ে প্রতিবাদ হত, তাহলে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলাতে পারত।'
অমর্ত্য সেন বরাবরই বলে এসেছেন তাঁর মধ্যে শান্তিনিকেতনের প্রভাব বেশি। সেই শান্তিনিকেতন ক্যাম্পাসেই আধাসেনা মোতায়েন করতে চান উপাচার্য। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'শান্তিনিকেতনে যখন আমলাতন্ত্র থাবা বসাল, তখন প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা শিক্ষক, শিক্ষাবিদদের হাত থেকে চলে গেল জাতীয় রাজনীতিকদের হাতে। প্রধানমন্ত্রী হলেন এখানকার আচার্য। তিনি নিচু মানসিকতার বদলে স্বাধীন মতামত পোষণে অনুপ্রেরণা দিতে পারতেন।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন