Uttar Pradesh: উত্তরপ্রদেশের পশ্চিম অংশে আলাদা রাজ্য - দুই দলীয় নেতার মতবিরোধে বিব্রত বিজেপি

People's Reporter: প্রাক্তন BJP বিধায়ক সঙ্গীত সোম বালিয়ান-এর দাবি প্রসঙ্গে বলেছেন যে এই ঘটনা ঘটলে অঞ্চলটি "মিনি-পাকিস্তান" হবে। তিনি বলেন, পরিবর্তে, পশ্চিম উত্তর প্রদেশকে দিল্লির সাথে যুক্ত করা উচিত।
ছবি প্রতীকী
ছবি প্রতীকীফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

উত্তরপ্রদেশের পশ্চিম অংশে আলাদা এক রাজ্য তৈরির দাবি নিয়ে শাসক বিজেপির অন্দরেই এক বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়ান এই সপ্তাহের শুরুতে, মীরাটে আন্তর্জাতিক জাঠ সংসদে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশকে একটি পৃথক রাজ্য করার দাবি উত্থাপন করেন। এমনকি মীরাটকে প্রস্তাবিত রাজ্যের রাজধানী করারও পরামর্শ দেন তিনি।

যদিও বালিয়ানের বিবৃতি এই অঞ্চলে আলাদা রাজ্যের জন্য কয়েক দশকের পুরানো দাবিকে ফের খুঁচিয়ে তুলেছে এবং বিজেপির পক্ষ থেকে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এই দাবির বিরোধিতা করেছে।

প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক সঙ্গীত সোম বালিয়ান-এর দাবি প্রসঙ্গে বলেছেন যে এই ঘটনা ঘটলে অঞ্চলটি "মিনি-পাকিস্তান" হয়ে যাবে। তিনি বলেন, পরিবর্তে, পশ্চিম উত্তর প্রদেশকে দিল্লির সাথে যুক্ত করা উচিত।

পৃথক রাজ্যের বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করে সঙ্গীত সোম জানিয়েছেন, কয়েক দশক ধরে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ জনসংখ্যাগত পরিবর্তন দেখেছে এবং এই অঞ্চলের জন্য পৃথক রাজ্য আর সম্ভব ছিল না। সারধানার দু’বারের বিধায়ক আরও জানিয়েছেন, এক নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জনসংখ্যার ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে, পৃথক রাজ্য হলে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে যাবে।

সোম বলেন, "এর ফলে এই অঞ্চলের কোনো বিকাশ হবে না, তবে রাজনৈতিক দৃশ্যপট অবশ্যই পরিবর্তিত হবে। এর বদলে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশকে দিল্লির সাথে যুক্ত করার উদ্যোগ নিলে ভাল হবে।"

বিতর্কিত এই ইস্যুতে দলের দুই সিনিয়র নেতার আলাদা আলাদা মতামত প্রকাশ্যে এসে যাওয়ায় কিছুটা হলেও বিব্রত বিজেপি।

বিজেপির এক প্রবীণ মুখপাত্র জানিয়েছেন: “দলীয় নেতৃত্ব এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত আমরা এই বিষয়ে মন্তব্য করব না। দুই নেতারই নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে এবং আমরা তাদের কাউকেই বাদ দিতে পারি না।”

ইতিমধ্যেই, সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি (এসবিএসপি) প্রধান ওমপ্রকাশ রাজভর, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র মিত্র, উত্তরপ্রদেশকে চারটি রাজ্যে বিভক্ত করার জন্য বালিয়ানের দাবিকে সমর্থন করেছেন। এই চারটি ভাগ হল পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, বুন্দেলখণ্ড, পূর্বাঞ্চল এবং মধ্য উত্তরপ্রদেশ।

রাজভার বলেছেন, "উত্তরপ্রদেশ একটি বড় রাজ্য এবং দক্ষ প্রশাসনের জন্য, এই রাজ্যকে চার রাজ্যে ভাগ করা উচিত।"

রাষ্ট্রীয় লোকদলের (আরএলডি) মুখপাত্র অনিল দুবে বলেছেন, রাজ্যের পুনর্গঠন দলের নির্বাচনী ইশতেহারে রয়েছে এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশকে আলাদা রাজ্য হিসেবে গঠন করা আরএলডির পুরনো দাবি। "কিন্তু বালিয়ানের বক্তব্য লোকসভা নির্বাচনের আগে একটি রাজনৈতিক চক্রান্ত মাত্র।"

“প্রাক্তন আরএলডি প্রধান অজিত সিং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে হরিতপ্রদেশ গঠনের দাবি তুলেছিলেন। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশকে একটি পৃথক রাজ্য হিসাবে গঠনের বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়ার পরিবর্তে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উচিত পৃথক রাজ্য গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়া।” বিএসপি এমএলসি ভীমরাও আম্বেদকর বলেছেন যে ২০১১ সালে, যখন দল ক্ষমতায় ছিল, রাজ্য বিধানসভায় উত্তরপ্রদেশকে চারটি রাজ্যে বিভক্ত করার জন্য এক প্রস্তাব পাস করেছিল।

তিনি আরও বলেন, “প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু কেন্দ্রের কোনো সরকারই এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। বিএসপি প্রধান মায়াবতী উত্তরপ্রদেশের বিভাজনের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছিলেন। বিএসপি সরকার উত্তরপ্রদেশকে চারটি ভাগে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল - পূর্বাঞ্চল (২১ জেলা), বুন্দেলখণ্ড (৭ জেলা), অবধ প্রদেশ (২১ জেলা) এবং পশ্চিম প্রদেশ (২৬ জেলা)।

তিনি বলেন, বিজেপি যদি ছোট রাজ্য গঠনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় তবে এই বিষয়ে প্রস্তাব পাশ করার জন্য সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা উচিত।

তাঁর দাবি, “এলএস নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে, বিজেপি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে রাজ্য ভাগের কার্ড খেলেছে। বালিয়ান একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং তাঁর উচিত এই বিষয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত না করা। তিনি যেভাবে একটি বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন তা স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে রাজ্যের উন্নয়নের পরিবর্তে, বিজেপি ভোট-ব্যাঙ্কের রাজনীতিতে বেশি আগ্রহী।”

বালিয়ানের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধুরী জানিয়েছেন, বিজেপির উচিত বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট অভিমত দেওয়া। তাঁর জিজ্ঞাসা, "উত্তরপ্রদেশের বিভাজন কি বিজেপির একটি অফিসিয়াল স্ট্যান্ড? নাকি মন্ত্রীর এই বক্তব্য লোকসভা নির্বাচনের আগে জনসাধারণের ইস্যু থেকে জনগণের মনোযোগ সরানোর জন্য এটি একটি নিছক রাজনৈতিক কৌশল?"

কংগ্রেস মুখপাত্র অশোক সিং বলেছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি-র মতো বিষয়গুলি থেকে মানুষের মনোযোগ সরানোর জন্য বিষয়টি উত্থাপন করেছেন।

তাঁর মতে, "বিজেপি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে জায়গা হারাচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দলের ভাগ্য পুনরুজ্জীবিত করার জন্য পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ নিয়ে কার্ড খেলেছেন।"

ছবি প্রতীকী
NewsClick: দিল্লি দাঙ্গা, কৃষক আন্দোলন নিয়ে লিখেছেন? কংগ্রেস ভাল? সাংবাদিকদের প্রশ্ন পুলিশের
ছবি প্রতীকী
AAP: আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংয়ের বাড়িতে হানা ইডির, চলছে তল্লাশি

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in