রাজ্যের পলিটেকনিক কলেজগুলিতে চলতি বছর ছাত্র ভর্তির পরিমাণ প্রায় অর্ধেক। পাশাপাশি কলেজগুলিতে নেই শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। এবছর ৫০ শতাংশের বেশি পড়ুয়া পাশও করতে পারেনি। সবমিলিয়ে রাজ্যের পলিটেকনিক শিক্ষা ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে। ২০১০ সালে রাজ্যে ছাত্র ভর্তির সংখ্যাটা ছিল প্রায় ১ লক্ষের কাছাকাছি। চলতি বছর তা মাত্র ২৮ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
রাজ্যে বিভিন্ন ধরণের শিল্পের বিস্তার ঘটাতে পলিটেকনিক ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সূত্রের খবর, শেষ কয়েক বছরে রাজ্যে কোনো শিল্পের বিকাশ হয়নি। অন্যদিকে, গোটা রাজ্যে মোট পলিটেকনিক কলেজের সংখ্যা ৭৭ টি। কিন্তু সেই কলেজগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর ও যথেষ্ট পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে।
জানা গেছে, ৭৭ টি কলেজের মধ্যে বর্তমানে অধ্যক্ষ রয়েছে মাত্র ৮ টি কলেজে। অন্যদিকে, কলেজে ফোরম্যান থাকার কথা ১৬০ জন, সেখানে আছে মাত্র ৫ জন। ৯৬৩ জন ওয়ার্কশপ ইন্সপেক্টরের জায়গায় কাজ করছেন মাত্র ৫৬ জন। ৫৫৬ জন ল্যাব অ্যাসিস্টের মধ্যে আছেন মাত্র ৩২ জন। ৭৭ জন গ্রন্থগারিকের বদলে আছেন মাত্র ৬ জন।
অন্যদিকে, পরিবর্তন হয়েছে ভর্তির সময়ের। আগে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল বেরোনোর আগেই এপ্রিলে প্রকাশিত হত পলিটেকনিকের ফলাফল। মে মাসের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে জুন থেকে শুরু হয়ে যেত ক্লাস। কিন্তু চলতি বছরে ভর্তি পিছিয়ে গেছে সেপ্টেম্বরে। ফলে অনেকেই ভর্তি হয় নি।
জানা গেছে, চলতি বছর মাত্র ২৮ হাজার পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে পলিটেকনিকে। আবেদন করেছিল ৩১ হাজার। ২০১৮ –এর শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য আবেদন করেছিল ৬৪ হাজার পড়ুয়া। আর ২০১০ সালে এই সংখ্যাটা ছিল প্রায় ১ লক্ষ।
এই ভর্তি না হওয়ার পেছনে আরও এক কারণ হল ৫০ শতাংশ বেশি পড়ুয়ার ফেল। পলিটেকনিকের এক অধ্যাপক সংবাদ মাধ্যমে এত পরিমাণ পড়ুয়া পাশ না করার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, এবার ৬ মাসের সেমিস্টারকে ৩ মাসে করা হয়েছে। পাশাপাশি, পরীক্ষার ১৫ দিন আগে প্রশ্নপত্রের ধাঁচে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যার ফলে, বহু পড়ুয়া প্রস্তুতির সুযোগের অভাবে পাশ করতে পারেনি।
অন্যদিকে, দেরিতে কোর্স শেষ হওয়ার কারণে অন্য রাজ্যের ছেলেমেয়েরা আগে চাকরি পেয়ে যাচ্ছে। ফলে চাকরির সুযোগ কমছে এরাজ্যের ছেলেমেয়েদের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন