কমলা রঙের রিম এবং ম্যাচিং টুপি সহ বাদামী ইউনিফর্ম পরা পরিবেশন করছেন। পেছনের দিকে আরও কয়েকজন খাবার, পানীয় তৈরি করছেন পরিবেশকদের হাতে তুলে দেবার জন্য। সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাকে এক রেস্তোরাঁ চালু করা হয়েছে। যে রেস্তোরাঁ চালাচ্ছেন ডাউন সিনড্রোম লক্ষণযুক্ত বেশ কয়েকজন সিরিয়ান নাগরিক। এই কাফের পরিবেশক থেকে প্রস্তুতকারক – সকলেই ডাউন সিন্ড্রোমের লক্ষণযুক্ত। যে কাফের নাম দেওয়া হয়েছে সুসেট।
দামাস্কাসের তিশরিন পার্কে চালু হওয়া এই রেস্তোরাঁ ঘিরে সাধারণ মানুষের ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। জিং হুয়ার প্রতিবেদন অনুসারে বর্তমানে প্রায় ২০ জন মিলে এই রেস্তোরাঁ চালাচ্ছেন।
কাফেতে ওয়েটার এবং ওয়েট্রেসরা শুধুমাত্র ভালো পরিষেবা দেওয়াই নয়, গান এবং নাচের মাধ্যমে দারুণ সুন্দর পরিবেশ তৈরি করেছেন বলে অভিমত গ্রাহকদের।
গত বছরে জুজৌর অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ডাউন সিন্ড্রোম লক্ষণযুক্তদের সঙ্গে নিয়ে একটি কাফে শুরু করার পরিকল্পনা করা হয়। সেইসময় পরীক্ষামূলকভাবে এক মাসের জন্য কিছু ডাউন সিন্ড্রোম লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিদের নিযুক্ত করা হয়েছিলো। এই পরিকল্পনা সফল হবার পরেই চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ‘সুসেট’ কাফে চালু করা হয়েছে।
জুজৌর অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড চেয়ারম্যান খলৌদ রজব জিং হুয়াকে বলেন, এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে চলতি ধারণা ভেঙে দেওয়া এবং এঁদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতে সাহায্য করা।
এখনও পর্যন্ত, ডাউন সিনড্রোমের ২০ জন এবং ১০ জন সাধারণ মানুষ বর্তমানে সুসেটে কাজ করছেন। রজব আরও বলেন, এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র এক কাফে তৈরি নয়। বরং তার চেয়ে অনেক বেশি।
তিনি বলেন, "সুসেট একটি ক্যাফের চেয়ে বেশি। ‘সুসেট’ একটি ধারণা। যা সমাজের এই বিশেষ গোষ্ঠীকে সংহত করবে এবং আমাদেরকেও তাঁদের সম্পর্কিত মনোভাবে বদল আনবে।"
ক্যাফেতে আসা গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্ডার নিতে ব্যস্ত থাকা সুসেট কাফের ২০ জন পরিবেশকের একজন মুন্না সালেহ জিংহুয়াকে বলেন যে, তিনি তার নতুন চাকরিতে খুশি।
সালেহ বলেন, তিনি কঠোর পরিশ্রম করে বেতন পেতে আগ্রহী। কারণ এর ফলে তিনি নিজেকে মূল্যবান প্রমাণ করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, "আমি এখানে কাজ করতে পেরে খুশি এবং এখানে সবকিছুই নিখুঁত। আমার পক্ষে যতটা সম্ভব আমি ততটা দিয়ে গ্রাহকদের পরিবেশন করার চেষ্টা করি।"
ডাইন সিন্ড্রোমের লক্ষণযুক্ত কাত্তান নামক এক যুবতী জানান, ডাউন সিনড্রোমের কারণে, কিছু না করে বাড়িতে বসে থাকতে বিরক্ত লাগতো।
তিনি জানান, এখন "আমি বাড়িতে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেছিলাম।" তিনি আরও বলেন, ‘সুসেটে কাজ করে আমি খুবই আনন্দিত’।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন