হরিদ্বারের ধর্ম সংসদ থেকে মুসলিম গণহত্যার ডাক দেওয়া হিন্দুত্ববাদী নেতাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এই ধরণের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেদিকে বিশেষ নজর রাখার দাবিতে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি লিখলেন দেশের সশস্ত্র সেনাবাহিনীর পাঁচজন প্রাক্তন প্রধান, প্রবীণ আমলা, চিকিৎসক সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। চিঠিতে দলিত, খ্রিস্টান, শিখদের মতো অন্যান্য সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, "দেশের অভ্যন্তরে শান্তি এবং সম্প্রীতি নষ্ট হলে তা বহিরগত শক্তিকে উৎসাহিত করবে। আমাদের বৈচিত্র্যময় বহুমাত্রিক সমাজে একটা গোটা সম্প্রদায়কে হত্যা করার এই নির্লজ্জ আহ্বান সেনা এবং পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ ঐক্য এবং বোঝাপড়ায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।"
চিঠিতে হরিদ্বারের ধর্ম সংসদের কথা সরাসরি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, "হরিদ্বারে ধর্ম সংসদ নামে তিন দিনের একটি ধর্মীয় সমাবেশে বক্তারা যে ভাষণ দিয়েছেন তাতে আমরা সত্যিই উদ্বিগ্ন। হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বারবার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। হিন্দু ধর্ম রক্ষার জন্য হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে মুসলমানদের হত্যা করতে বলেছেন বক্তারা। সেনাবাহিনীকে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাফাই অভিযান শুরু করতে বলা হচ্ছে। এককথায় সেনাবাহিনীকে গণহত্যায় অংশ নিতে বলা হচ্ছে। এটা তীব্র নিন্দনীয়।"
চিঠিতে দিল্লি, ছত্তিশগড়ের রায়পুর সহ একাধিক জায়গায় হওয়া হিন্দু ধর্ম সংসদের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, "সম্প্রতি একাধিক জায়গায় এইধরণের রাষ্ট্রদ্রোহী সভা আয়োজন করা হচ্ছে। এরকম ঘৃণাত্মক, উস্কানিমূলক মন্তব্যকে অনুমতি দিতে পারি না আমরা। এতে শুধু অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার গুরুতর লঙ্ঘনই হয় না, দেশের সামাজিক কাঠামোকেও ছিন্নভিন্ন করে দিতে পারে।"
এই চিঠিতে সই করেছেন অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল এল রামদাস, অবসরপ্রাপ্ত বায়ুসেনা প্রধান এসপি ত্যাগী, অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস জুলিও রিবেইরো, সঙ্গীত শিল্পী টি এম কৃষ্ণ, দিল্লির প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জঙ সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি।
এর আগে হিন্দুত্ববাদী নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমানাকে চিঠি লিখেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের ৭৬ জন আইনজীবী। তাঁরা চিঠিতে পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। তাই এই ধরণের ঘটনা বন্ধ করতে বিচারব্যবস্থার জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। অভিযুক্তদের নামের তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছিল চিঠিতে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন