সরকারি চাকরি মানেই অবসরের পর মাস গেলে টাকার একটা স্থায়ী অংক পেনশন হিসেবে ব্যাংক একাউন্টে ঢোকা। তাতে চাকরিজীবী মানুষটিও অনেকটাই নিশ্চিন্তে থাকতেন। কিন্তু বোধহয় এবার সেই নিশ্চিন্ত হওয়ার সময় শেষ হতে চলেছে। কারণ কেন্দ্রের ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা। আর গত দেড় বছর ধরে চলা কোভিড পরিস্থিতি সেই অবস্থাকে আরও সঙ্কটজনক করে তুলেছে।
কংগ্রেস আমলে কেন্দ্রের ঋণ ছিল প্রায় ৫৯ লক্ষ কোটি টাকা। নরেন্দ্র মোদির আমলে ২০২০-২১ আর্থিক বর্ষে তা বেড়ে ১৯৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘাটতি পূরণ হবে কী করে? বিশ্বস্ত সূত্র জানাচ্ছে, ঘাটতি মেটানোর জন্য চাপ পড়বে পেনশনভোগীদের উপর। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের আজীবন পেনশন দেওয়া হবে না। একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর তাঁদের এককালীন টাকা দেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে নীতি আয়োগে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এই ব্যবস্থা চালু হলে অবসরের নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে আর ডিএ বা অন্য ভাতা বাড়বে না। কেন এমনটা করা হচ্ছে? কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। ২০১১ সালে মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬৮ বছর, ২০২১ সালে এসে তা দাঁড়িয়েছে ৭১-এ। ফলে বহুদিন পর্যন্ত পেনশনের অর্থ গুনতে হচ্ছে। সরকারি কর্মী তো বটেই, তিনি প্রয়াত হলে তাঁর স্ত্রী অথবা স্বামীকেও আজীবন দিতে হচ্ছে ফ্যামিলি পেনশন। তাই বোঝা কমাতে ‘সাসটেনেন্স অ্যালাউন্স’ জাতীয় বিশেষ প্রকল্পের ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন মন্ত্রকের মতামত জানাতে চাওয়া হয়েছে। বিশেষত, রেল। কারণ, এই মন্ত্রকের অধীনেই সবচেয়ে বেশি সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। ‘সাসটেনেন্স অ্যালাউন্স’ জাতীয় যে প্রকল্প নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, সেখানে অবসরের পর প্রাক্তন কর্মীর ৭০ অথবা ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত রেগুলার পেনশন বা নিয়মিত অবসরভাতা দেওয়া হতে পারে। তারপর পেনশনের একটি নির্দিষ্ট হার মিলবে। সেটি ৪০ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন