ঐতিহাসিক ফলাফলের দু'সপ্তাহেরও বেশি সময় পরে নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন এই সরকারে পুরোনো কোনো মুখই রাখা হয়নি। এমনকি বিদায়ী মন্ত্রিসভার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজাকেও বাদ দেওয়া হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় যাঁর কর্মপদ্ধতি গোটা বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে। যদিও মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়লেও বিধানসভায় তাঁকে মুখ্য সচেতক করা হয়েছে।
শৈলজাকে বাদ দেওয়ার এই সিদ্ধান্তে দলের মধ্যেই অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের মধ্যে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে পরামর্শ করেনি রাজ্য নেতৃত্ব। এই সিদ্ধান্তে যাঁরা হতাশ হয়েছেন তাঁদের মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাতও রয়েছেন।
ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এইসময় এক অভূতপূর্ব অবস্থার মধ্যে রয়েছে সিপিআইএম। একদিকে স্বাধীনতার পর থেকে এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গে একটিও আসন পায়নি সিপিআইএম, যেখানে দীর্ঘ ৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকেছে তাঁরা। অপরদিকে গত চার দশকের রেকর্ড ভেঙে কেরলে পরপর দু'বার সরকার গড়লো দলটি। এই পরিস্থিতিতে কেরলের মন্ত্রিসভা নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে চায়না কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যদিও দলের পরবর্তী কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এই বিষয়টি উঠে আসতে পারে বলে আশা করছেন অনেকেই। এক সিনিয়র নেতার কথায়, "আমি নিশ্চিত সদস্যরা বিষয়টি উত্থাপন করবেন।"
যদিও এই প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, সীতারাম ইয়েচুরি এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সিপিআইএমের কোন নির্বাচিত বিধায়ককে মন্ত্রী করা হবে তা পার্টির রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত এবং এক্ষেত্রে রাজ্য কমিটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে ও সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কে কে শৈলজাকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক বলে মনে করছে না কেরলে সিপিআইএমের জোটসঙ্গী সিপিআই। সিপিআই নেতৃত্বও বিশ্বাস করে যে শৈলজার বাদ পড়া রাষ্ট্র ও জাতীয় পর্যায়ে সমস্যা তৈরি করবে।
দলের এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে কে কে শৈলজা জানিয়েছেন – এটা আমাদের দলের সিদ্ধান্ত এবং আমার এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই। তাছাড়া আমি একা নই। গতবারের কোনো মন্ত্রীকেই নতুন মন্ত্রীসভায় নেওয়া হয়নি।
যদিও মন্ত্রীসভা থেকে কে কে শৈলজার বাদ পড়ার প্রতিবাদ আছড়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনকি কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরও এই সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। যদিও কে কে শৈলজা সেই বিষয়ে মুখ খোলেননি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন