ইডির হাতে গ্রেফতার হলেন আরও এক তৃণমূল মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার প্রায় ২১ ঘণ্টা তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। রাত প্রায় সাড়ে তিনটের সময় মন্ত্রীকে তাঁর সল্টলেকের বাড়ি থেকে বের করে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে প্রায় ১৪ জন তৃণমূল ‘হেভিওয়েট’ নেতাকে জেলে যেতে হয়েছে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি, সিবিআই কিংবা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়কদের তালিকা বেশ লম্বা। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সেই তালিকার একেবারে নবতম সংযোজন। এই সবকিছুর শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে, সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র ও তৎকালীন রাজ্যসভা সাংসদ কুণাল ঘোষ।
একমাত্র কুণালই রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। বাকিরা প্রত্যেকেই গ্রেফতার হয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডি কিংবা সিবিআইয়ের হাতে। সারদা কাণ্ডে কুণালের পরপরই সিবিআইয়ের হাতে আটক হন তৎকালীন রাজ্যসভার সাংসদ সৃঞ্জয় বসু এবং রাজ্যের তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী তথা কামারহাটির বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। এরপর রোজভ্যালি চিটফান্ড কাণ্ডে তৃণমূলের লোকসভা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিনেতা তথা তৃণমূল নেতা তাপস পালকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
তবে ঘাসফুল শিবিরের অধিকাংশ নেতা-মন্ত্রীই গ্রেফতার হন ২০২০ সালের পর থেকে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া একটি আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ২০২১ সালে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ কে.ডি সিংকে। ওই বছরই বিধানসভা নির্বাচনের পর এক সকালে আচমকা হানা দিয়ে যার যার বাড়ি থেকে নারদা কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয় রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রকে।
এরপর গত বছর জুলাই মাসে হয় তৃণমূলকে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা দলের সাধারণ সম্পাদক পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তারপর একই মামলায় পরপর গ্রেফতার করা হয় দলের বর্তমান বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য এবং আরেক বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। ওইবছরই নভেম্বর মাসে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করা হয় শাসকদলের আর এক হেভিওয়েট নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতার সেই তালিকার সাম্প্রতিকতম সংযোজন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন