গত জুন মাসে লাইনচ্যুত হয় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। এরপর ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস এবং এরপর মঙ্গলবার সকালে হাওড়া-মুম্বাই এক্সপ্রেস। রিপোর্ট অনুযায়ী, মোদী সরকার তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার দেড় মাসের মধ্যেই অর্থাৎ গত জুন এবং জুলাই মাসে ভারতে একাধিক রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২০ জনের। আহত হয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি মানুষ। বারবার দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ট্রেনের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে।
জুন ১৭ঃ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত
গত ১৭ জুন জলপাইগুড়িতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। যার ফলে ৬০ জনের বেশি আহত হন এবং ১১ জনের মৃত্যু হয়। রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, একটি মালগাড়ি সিগন্যাল না মেনে নিউ জলপাইগুড়ির কাছে রাঙাপানিতে আগরতলা থেকে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ধাক্কা দেয়।
জুলাই ১৮ঃ চণ্ডীগড়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত
গত ১৮ জুলাই চণ্ডীগড় থেকে ডিব্রুগড়গামী এক্সপ্রেস ট্রেন উত্তরপ্রদেশের গোন্ডার কাছে লাইনচ্যুত হয়। যার ফলে চারজন মারা যায় এবং ৪০ জনেরও বেশি আহত হয়। উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা ও ঝিলাহির মাঝামাঝি পিকাউড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
জুলাই ৩০ঃ হাওড়া-মুম্বাই মেল লাইনচ্যুত
মঙ্গলবার ভোরে ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের কাছে হাওড়া-মুম্বাই প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ১৮ টি বগি লাইনচ্যুত হয়। যার ফলে কমপক্ষে দুইজন মারা যায় এবং ২০ জন আহত হয়। রেলের আধিকারিকদের মতে, ওই ট্র্যাকে একটি মালগাড়ি লাইনচ্যুত অবস্থায় ছিল। এটির আথে হাওড়া-মুম্বাই মেলের সাথে সংঘর্ষ হয়।
এছাড়াও এই দেড় মাসে কমপক্ষে ৭টি মালগাড়ির লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে অন্যতম গত ২০ জুলাই উত্তরপ্রদেশের আমরোহাতে একটি মালগাড়ির ১২টি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়।
দু'মাসের মধ্যে পরপর তিনটি বড় ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ একই - সিগন্যালের ত্রুটি বা ট্র্যাকের সমস্যা। আরও কারণ হল - সুরক্ষা কবচ না থাকা, পর্যাপ্ত কর্মীর অভাব।
কী এই সুরক্ষা কবচ?
ভারতীয় রেল একটি ইন-হাউস স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা এবং সতর্কতা (ATP) সিস্টেম তৈরি করেছে, যার নাম 'KAVACH' বা 'কবচ'। যখন একজন ট্রেন চালক কোনো সিগন্যাল অমান্য করেন (Signal Passed at Danger - SPAD), ‘কবচ’ সুরক্ষা সাথে সাথেই বিষয়টিতে সতর্কবার্তা দেয়। নির্ধারিত দূরত্বের মধ্যে একই লাইনে অন্য ট্রেন এসে গেলে ‘কবচ’ সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ট্রেন চালককে সতর্ক করা যেতে পারে, ব্রেক নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে এবং ট্রেনটিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে থামানো যেতে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে।
এ বছর রেলের জন্য ২.৫২ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩-২৪ অনুসারে, ট্রেনের মূলধন ব্যয় স্থাপনা গত পাঁচ বছরে ৭৭ শতাংশ বেড়েছে। রেল মন্ত্রকের তথ্য থাকা সত্ত্বেও যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে খুব বেশি ভাবনা চিন্তা গ্রহণ করা হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন