অপরাধ সংক্রান্ত ঘটনায় বরাবরই প্রথম সারিতে থাকে উত্তরপ্রদেশ। এবার নারী নির্যাতনের ঘটনায় যোগী রাজ্য দেশের এক নম্বরে উঠে এল। খোদ জাতীয় মহিলা কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে ডবল ইঞ্জিন সরকার চালিত এই রাজ্য মহিলাদের জন্য কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত এক বছরে মহিলাদের উপর যে ধরনের অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, তা গত সাত বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। গোটা দেশে অভিযোগ জমা পড়েছে ৩০ হাজার ৮৬৪টি। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৮২৮টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে যোগীরাজ্য থেকে। কোন রাজ্য সুশাসনের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে, মোদি সরকার বরাবর সে ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশের উদাহরণ তুলে ধরেন। কেন্দ্রের দাবি আর বাস্তবের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ, সেটাই দেখিয়ে দিল এই সমীক্ষা।
জাতীয় মহিলা কমিশনের রিপোর্ট বলছে, ২০১৪ কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। সেবারই সর্বাধিক নারী নির্যাতনের খবর পাওয়া গিয়েছিল। গোটা বছরে নারী নির্যাতনের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছিল ৩৩ হাজার ৯০৬টি। সাত বছর পর সংখ্যাটা আবার সেই রেকর্ডের কাছাকাছি পৌঁছল। ২০২০ সালে এই সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়ে ২৩ হাজার ৭২২টি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক বছরে অভিযোগ বেড়েছে ৩০ শতাংশ। রিপোর্ট অনুযায়ী, এর মধ্যে ১১ হাজার ১৩টি অভিযোগ হয়েছে মহিলাদের মানসিক নির্যাতন সংক্রান্ত। তারপরেই রয়েছে গার্হস্থ্য হিংসা। প্রায় অর্ধেক ৬ হাজার ৬৩৩টি এই সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে। নথিভুক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫৮৯টি পণের দাবিতে নির্যাতনের ঘটনাও। একদিকে মুখে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ স্লোগান, অন্যদিকে মহিলাদের নানাভাবে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে বলে প্রমাণ এই রিপোর্ট।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই বছরে শ্লীলতাহানির ১ হাজার ৮১৯টি, ধর্ষণ এবং ধর্ষণের চেষ্টার ১ হাজার ৬৭৫টি অভিযোগ জমা হয়েছে। গত বছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিমাসে ৩ হাজার ১০০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে।
যোগীরাজ্যের পর নারী নির্যাতনে দ্বিতীয় স্থানে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দিল্লি। সেখানে ৩ হাজার ৩৩৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তারপরে আছে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও বিহার।
NCW প্রধান রেখা শর্মা জানিয়েছেন, অভিযোগ বেড়েছে কারণ কমিশন তার কাজ সম্পর্কে মানুষকে আরও সচেতন করছে। তিনি আরও বলেন, “এছাড়াও, কমিশন সর্বদা মহিলাদের সাহায্য করার জন্য নতুন উদ্যোগ চালু করার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে৷ এর সাথে সঙ্গতি রেখে, আমরা একটি রাউন্ড-দ্য-ক্লক হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছি। এখান থেকে তাঁদের অভিযোগ নথিভুক্ত করার পাশাপাশি প্রয়োজনে মহিলাদের সহায়তা পরিষেবা প্রদান করারও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন