আগ্রার পরশ হাসপাতালে অক্সিজেন বন্ধ রাখার মক ড্রিলে ২২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিতর্ক আরও বাড়লো। এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন হাসপাতালকে ক্লিন চিট দেবার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংস্থা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য অনুসারে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য এই ক্লিন চিট দেওয়া হয়েছে। গত এপ্রিল মাসের এই ঘটনার পরে আগ্রার ওই হাসপাতাল সিল করে দেয় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন।
আগ্রার হাসপাতালের ওই ঘটনায় দুই সদস্যের এক কমিটিকে তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে পরশ হাসপাতালকে ক্লিন চিট দেবার পরেই বিতর্ক দানা বাঁধে। এক বড়ো অংশের মানুষ ওই রিপোর্টকে 'অসংবেদনশীল' বলে জানিয়েছেন। এই ঘটনার পরেই আগ্রার জেলাশাসক পি এন সিং ট্রোলের শিকার হয়েছেন।
আগ্রার হাসপাতালের ওই ঘটনার পর পরশ হাসপাতালের ডিরেক্টর ডাঃ অজিঙ্ক জৈনকে এক ভিডিও বার্তায় এই মক ড্রিলের কথা বলতে শোনা গেছিলো। মুহূর্তে ওই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। এরপরেই হাসপাতালে অক্সিজেন বন্ধ রাখার মক ড্রিল নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয় অক্সিজেন বন্ধ রাখা এবং ২২ জন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা সঠিক নয়।
যদিও চিকিৎসকরা ছাড়া এই সরকারি রিপোর্টে বিশ্বাস করছেন না কেউই। প্রশাসনের বক্তব্য অনুসারে রাজ্যের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে এই ধরণের প্রচার করা হচ্ছে এবং এতে মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই ব্যাহত হবে। যদিও এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে এবং এখনও পর্যন্ত সেই বিষয়ে কোনো তদন্ত হয়নি।
এই ঘটনা ছাড়াও আগ্রায় কোভিডে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে বলা হচ্ছে জেলায় কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৪২৫ সেখানে ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন এবং শ্মশান থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে এই সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার জন। জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত গ্রামীণ এলাকা থেকে সমস্ত তথ্য সংগৃহীত হয়নি।
বিশিষ্ট পরিবেশবিদ শ্রাবণ কুমার সিংহের পরিবারের এক সদস্য সখেদে জানিয়েছেন, "নিঃসন্দেহে এক মাস ধরে এক বড় স্বাস্থ্য সঙ্কট ছিল, মূল্যবান জীবন বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুর ঘাটতি ছিল। যারা এই দায়িত্বে ছিলেন তাঁদের পাওয়া জায়নি এবং সবসময় তাঁরা উপর থেকে দিকনির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতেন। ওই ঘটনা থেকে কেউ বিশেষ কিছু শিক্ষালাভ করেছেন বলে এখন পর্যন্ত মনে হয়নি। প্রসঙ্গত, বিশিষ্ট পরিবেশবিদ শ্রবণ কুমার সিংহের জন্য অক্সিজেনযুক্ত বেডের ব্যবস্থা করা যায়নি এবং তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের সদস্যদের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন