লাগাতার ভূমিধসের জেরে বড় বিপর্যয়ের মুখে উত্তরখণ্ডের যোশীমঠ (Joshimath)। কমপক্ষে ৫৭০ টি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে। রাতারাতি বসে যাচ্ছে মাটি। ফলে যে কোনও মুহূর্তে এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, ভূমি ধসের আতঙ্কে শহর ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে ৬০ টিরও বেশি পরিবার। প্রশাসনের পক্ষে থেকে ২৯টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি ৫০০ টি পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কে বসবাস করছে যোশীমঠে।
যোশীমঠ পৌর কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র পাওয়ার জানান, 'ভূমি ধসে প্রায় তিন হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও বেশি।' তিনি বলেন, 'পুরসভার পক্ষ থেকে সমস্ত বাড়ি সমীক্ষা করা হচ্ছে। অনেক মানুষ তাঁদের বাড়িঘর ছেড়েও চলে গেছেন।'
প্রশাসনের মতে, বদ্রীনাথ মন্দির থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যোশীমঠ শহর। সেখানে ক্ষতিগ্রস্থ ৫৭০ টি বাড়ির মধ্যে ১০০ টি ব্যবহারের অবস্থাতেই নেই।
মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'শীঘ্রই যোশীমঠ পরিদর্শন করব আমি। পৌর কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র পাওয়ারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'
অন্যদিকে, সেভ যোশীমঠ কমিটি (Save Joshimath Committee)-র আহ্বায়ক অতুল সতী বলেন, 'আমরা গত এক বছর ধরে পুনর্বাসনের দাবি করে আসছি, কিন্তু আমাদের কথা শোনা হচ্ছে না।' অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, 'যোশীমঠের ঘাঁটি ডুবে যাচ্ছে... লোকেরা বাঁশের খুঁটি দিয়ে তাদের বাড়িগুলিকে বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু রাজ্য সরকার নির্বিকার।'
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে লাগাতার ভূমিধস নেমে এসেছে উত্তরাখণ্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এছাড়াও পাহাড় কেটে একাধিক রাস্তা তৈরির জন্যও মাটিক্ষয় হয়েছে। আলগা হয়ে গিয়েছে মাটি। সে কারণেই বারবার ধস নেমেছে, হড়পা বান এসেছে। পরিবেশবিদদের একাধিক সতর্কতা সত্ত্বেও প্রশাসনের তরফে সঠিকভাবে কোনও নজরদারি চালানো হয়নি বলেই এই বিপর্যয় নেমে এসেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন