এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঋণ প্রায় ৬ লক্ষ ৩১ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থ বর্ষে সেই ঋণ পৌঁছে যাবে ৬ লক্ষ ৯৩ হাজার কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক বছরে রাজ্যে ঋণের পরিমাণ বাড়বে ৬২ হাজার ৪৪৮ কোটি। গত বৃহস্পতিবার রাজ্য বাজেট পেশের সময় এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত রাজ্যের মোট ঋণের পরিমাণ ৬ লক্ষ ৩০ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে এই ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৬ লক্ষ ৯৩ হাজার ২৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজেটে বরাদ্দের সিংহভাগ টাকাই বাজার থেকে ধার করা হবে, তা মন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট।
২০১১ সালে রাজ্যে যখন সরকার পরিবর্তন হচ্ছে, তখন রাজ্যের ঘাড়ে ঋণের বোঝা ছিল ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৯৪৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত রাজ্যের মোট ঋণ ছিল এটাই। বর্তমানে যা বেড়ে হয়েছে ৬ লক্ষ ৩০ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র ১২ বছরে তৃণমূল সরকার বাজার থেকে ঋণ নিয়েছে ৪ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা।
রাজ্যের জনসংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়েছে। রাজ্যের বর্তমান ঋণের হিসেবে রাজ্যবাসীর মাথাপিছু দেনা এখন ৬৩ হাজার ৭৮ টাকা।
সদ্য ঘোষিত বাজেটে যেভাবে আয়ের উপায় না বলে, সমস্ত জনকল্যাণ প্রকল্পে ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে রাজ্যের আর্থিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কিত অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ পি কে মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাজেট বক্তৃতা পুরোটাই শুনেছি আমি। বিভিন্ন ভাতা প্রকল্পে বরাদ্দ অনেক বাড়ানো হয়েছে, যা স্পষ্টতই লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে করা হয়েছে। অথচ উচ্চতর কর রাজস্ব অর্জনের জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নেই বাজেটে। বরং, যানবাহনের উপর ট্যাক্স, লাক্সারি ট্যাক্স এবং স্ট্যাম্প শুল্কের মতো কিছু ক্ষেত্রে ট্যাক্স শিথিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এভাবে চললে আগামী অর্থবর্ষের শেষে বিপুল ঋণের বোঝা চাপবে সরকারের ঘাড়ে।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন