দেউচা পাঁচামি কয়লা প্রকল্পে বহু বেকারের কর্মসংস্থান হবে। এমনই প্রচার চালানো হচ্ছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু এই প্রকল্পের পিছনে নানা রকম তথ্য চাপা পড়ে আছে। আর তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বীরভূমের মহম্মদ বাজারের দেওচা পাঁচামি কয়লা প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি টাকা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। অনুব্রত মণ্ডল এই প্যাকেজ উদ্দেশ্যে বলেন, এমন প্যাকেজ কল্পনা করা যায় না। এত টাকা কেউ দেবে না।
এই প্রকল্পের জন্য তিন হাজার ৪০০ একর জমিতে যেমন বাস্তু জমি রয়েছে, তেমনি রয়েছে জঙ্গল, পাথর খাদান, পাথর ভাঙ্গার কল, চাষ জমি। বারোটি গ্রামে ২১ হাজারের বেশি মানুষ বাস করে। কিন্তু তাদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই যেভাবে প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শুধু পুনর্বাসন নয়। উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা এক হাজার একর জমির উপর টাটার গাড়ি তৈরি মতো বিষয় নয়। এখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর জমি র নীচ থেকে কয়লা তোলা হবে। জঙ্গল সাফ হবে, পাথর তোলা হবে। তারপর কয়লা কীভাবে তোলা হবে, পরিবেশ রক্ষায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে,সেসব কিছুই জানানো হয়নি।
সিঙ্গুরে টাটাদের গাড়ি কারখানা ছিল বেসরকারি উদ্যোগ। টাটারা না চাইলেও শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন চুক্তির বিষয় প্রকাশ করেছিলেন। ওই চুক্তি নিয়ে হৈচৈও করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল। কিন্তু এই প্রকল্প পুরোপুরি রাজ্য সরকারের হলেও কয়লা তোলার বিষয় নিয়ে বিশদে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। রাজ্য সরকারের পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড নিজেই কয়লা উত্তোলন করবে নাকি কোন বেসরকারি সংস্থাকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা এখনও জানা যায়নি।
পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, এর ফলে পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে। এই ধরনের প্রকল্পকে সফল করতে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া দরকার। কিন্তু তারা তা করেছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন