ভারতে ধনীরা অত্যন্ত ধনী আর নীচের সারির মানুষের অর্ধেকের বেশি জনের হাতে দেশীয় সম্পদের প্রায় কিছুই নেই। বিশ্ব অসাম্য রিপোর্টে যে তথ্য প্রকাশে এসেছে তাতে বিশ্বের কাছে সমালোচনার মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। চলতি বছরে দেশের মোট আয়ের পাঁচ ভাগের এক ভাগই গিয়েছে দেশের উপরের সারির এক শতাংশ মানুষের হাতে। অথচ নিচু তলার ৫০ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে দেশের মোট আয়ের মাত্র ১৩ শতাংশ।
প্যারিস স্কুল অব ইকনমিকস—এর ‘ওয়র্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাব’-এর এই রিপোর্ট তৈরির সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন ফ্রান্সের অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটি। রিপোর্টের মুখবন্ধে নোবেলজয়ী দুই অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার ডুফলো লিখেছেন, বিশ্বের যে সব দেশে অসাম্য চরমে, ভারত এখন তার মধ্যে পড়ছে।
আসাম্যের গভীরতা বুঝতে মোদী জমানায় সরকারি পরিসংখ্যান এর গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কোভিড-সঙ্কটে গোটা বিশ্বেই কোটিপতিদের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। বিশ্বের মাত্র ২,৭৫০ জন বিলিয়নেয়ার পৃথিবীর ৩.৫ শতাংশ সম্পদের মালিক। অথচ ১৯৯৫ সালে এঁদের হাতে বিশ্বের ১ শতাংশ সম্পদ ছিল।
ভারতের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ জমানায় ভারতে অসাম্য চরমে ছিল। ১০ শতাংশ উচ্চবিত্ত মানুষের পকেটেই দেশের মোট আয়ের অর্ধেক চলে যেত। স্বাধীনতার পরে "সমাজতন্ত্রের" অনুপ্রেরণায় এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ফলে এই অসাম্য কমতে থাকে। কিন্তু সরকারি নিয়ন্ত্রণ তুলে উদারীকরণ শুরু হওয়ার পর থেকে আবার ভারতে আয়-সম্পদের অসাম্য ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। মূলত সমাজের উপরের সারির ১ শতাংশ মানুষ এই আর্থিক সংস্কারের ফায়দা পেয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন