কর্পোরেট ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপীদের কোটি কোটি টাকার ঋণ মকুব করে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হল রাজ্যের এক সিভিল সোসাইটি ফোরাম। দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে একটি চিঠি লিখে কেন্দ্রের তরফে বছর বছর কর্পোরেট ঋণখেলাপীদের কোটি কোটি টাকার অনাদায়ী ঋণ রাইট অফ করে দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ওই ফোরাম। ঋণ মকুবের নামে কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে জাতীয় কোষাগার লুঠের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলে প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ জানিয়েছে তাঁরা।
গত ২৬ জুলাই বাংলার ‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ ফোরামের তরফে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে দেওয়া চিঠিতে জানানো হয়েছে, গত তিন বছরে প্রায় ৫,৮৬,৮৯১ কোটি টাকার অনাদায়ী ঋণ রাইট অফ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। দেশের ব্যাঙ্কগুলি বিশাল অঙ্কের সেই ঋণের মধ্যে মাত্র ১,০৯,১৮৬ কোটি টাকাই উদ্ধার করতে পেরেছে। গত তিন বছরে রাইট অফ করা অনাদায়ী সেই পাহাড়প্রমাণ ঋণের মধ্যে উদ্ধার হওয়া অর্থের পরিমাণ মাত্র ১৮.৬০ শতাংশ।
চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, ক্ষমতাশালী কর্পোরেট সংস্থাগুলির তরফে নেওয়া বিশাল পরিমাণ এই ঋণ বিনা বাক্যব্যয়ে রাইট অফ করে দেওয়া দেশের জাতীয় কোষাগার লুঠের সমান। কর্পোরেট সংস্থাগুলির ঋণের হিসেব ব্যাঙ্কের খাতা থেকে মিটিয়ে দিয়ে দেশের কোষাগার লুঠ করতে দেওয়া হচ্ছে। এই সম্পর্কিত রেকর্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, ব্যাঙ্কগুলি খেলাপী ঋণ উদ্ধারের জন্য IBC/NCLAT পদ্ধতিতে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ সুদ নিচ্ছে। যার জন্য অনাদায়ী ঋণ উদ্ধার পুরোপুরি ব্যর্থ হচ্ছে।
চিঠিতে এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে, “একদিকে কর্পোরেট সংস্থাগুলি কোটি কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ না করেই ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। আর অন্যদিকে সম্পদ ক্রেতা সংস্থাগুলি জলের দরে সম্পদ কিনে নিচ্ছে। এতে দুই পক্ষই লাভবান হচ্ছে। এইভাবেই দিনের শেষে দেশের জনগণের টাকা জাতীয় কোষাগার থেকে লুঠ করা হচ্ছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন