ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে। তবে এই হারের নেপথ্যেও রাজনৈতিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, কাতারে খেলতে আসার আগে থেকেই দেশের সিংহভাগ মানুষের সমর্থন হারায় ব্রাজিল। বিশেষ করে তারকা নেইমার।
ফুটবলকে যে শিল্পের ছোঁয়া দেওয়া যায় তা ব্রাজিলের থেকে ভালো করে কেউ জানবে না। পেলে, রবার্তো কার্লোস, রোনাল্ডিনহো, রোনাল্ডো, কাকা সহ আরও অনেক কিংবদন্তী ফুটবলারের জন্ম দিয়েছে এই ব্রাজিল। কিন্তু লাতিন আমেরিকার এই দেশের ফুটবলের সাথে রাজনীতির সম্পর্ক ফুটবল বিশ্বের কাছে অজানা নয়।
চলতি বিশ্বকাপে ব্রাজিল ছিটকে যেতেই মাথাচাড়া দিচ্ছে রাজনৈতিক প্রশ্ন। ব্রাজিলে এখন ক্ষমতায় রয়েছেন বামপন্থী নেতা ল্যুলা দ্য সিলভা। দক্ষিনপন্থী নেতা জাকির বলসোনারোকে হারিয়েছিলেন তিনি। এই বলসোনারোকেই নাকি সমর্থন করেছিলেন দলের তারকা স্ট্রাইকার নেইমার। ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে দক্ষিণপন্থী নেতাকে নিজের সমর্থনের কথা বলেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তিনি বলেছিলেন - জাইর বলসোনারোর ইচ্ছাশক্তির সাথে আমার ইচ্ছাশক্তির মিল খুঁজে পাচ্ছি।
নেইমারের বার্তার পরই বামপন্থী সমর্থকদের একাংশ নেইমারের ওপর ক্ষুব্ধ হন। তাঁর (নেইমার) বিরুদ্ধে প্রতিবাদও দেখান ক্ষুব্ধ বামপন্থীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রাজিল দলে এর প্রত্যক্ষ প্রভাব না পড়লেও পরোক্ষপ্রভাব পড়েছে। একদিকে বিশ্বকাপের মতো এতো বড়ো টুর্নামেন্ট অন্যদিকে দেশের একাংশের প্রত্যাখ্যান। সবমিলিয়ে বেশ চাপেই ছিলেন নেইমার।
উল্লেখ্য, ১৯৩০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের প্রধান ছিলেন গেতুইলো ভারগস। স্বৈরাচারী শাসক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। তিনি ব্রাজিলে একাধিক বড় স্টেডিয়াম বানিয়ে ছিলেন। তবে শুধু ফুটবল খেলার জন্য নয়। রাজনৈতিক জনসভা করার জন্যও সেগুলি নির্মাণ করা হয়েছিল।
আবার ১৯৭০ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের আগে ব্রাজিলের কোচ ছিলেন একজন বামপন্থী। তাঁকে বলপূর্বক সরিয়ে দিয়েছিলেন দেশের রাষ্ট্রপতি। কোচের অপরাধ ছিল ব্রাজিলে ঘটে চলা খুন, শাসকের নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন