২০০৫ সালে ভারতীয় দলে ডাক পান সুনীল ছেত্রী। ১৮ বছরের ফুটবল কেরিয়ারে গড়েছেন অনেক নজির। দেশের জার্সিতে গোলের সংখ্যায় লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোকে টেক্কা দিচ্ছেন তিনি। মঙ্গলবার নিজের অতীতে ফিরে গেলেন ভারত অধিনায়ক।
এক অনুষ্ঠানে সুনীল জানান, "মালয়েশিয়ায় যেদিন কোচ বব হাউটন আমার হাতে ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ড পরিয়ে দিলেন, সে দিন হঠাৎ করে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। কারণ, তার আগে পর্যন্ত আমি ছিলাম অতি সাধারণ একজন ফুটবলার, সবার পিছনে বসতাম।"
তিনি আরও বলেন, "যে দিন থেকে আমার হাতে আর্মব্যান্ড ওঠে, সে দিন থেকে প্রথম তিন-চারটে ম্যাচে সবার আগে বসতে শুরু করি। তখনই নেতৃত্বের চাপ অনুভব করতে শুরু করি। আসলে আগে যে রকম ছিলাম, সে রকম থাকলেই ভালো হতো। তবে আরও একটু চিন্তা-ভাবনার প্রয়োজন ছিল। কারণ, তখন ব্যাপারটা শুধু আমাকে নিয়ে নয়, গোটা দলকে নিয়ে।"
দুই দশকে ভারতীয় দলের হয়ে খেলে প্রচুর নজির গড়েছেন, ভেঙেছেন সুনীল। ভারতীয় ফুটবল দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন তিনিই। নেতৃত্ব পাওয়ার পরে নিজেকে কীভাবে বদলেছেন, তাও শুনিয়েছেন।
সুনীল বলেন, "ড্রিবল, পাস, ক্রসিং, গোল—আগে চিন্তা ভাবনার কেন্দ্রে ছিল এগুলোই। প্র্যাকটিস, ম্যাচে এগুলো করে বাড়ি চলে যেতাম। অনেকে এগুলো নিয়ে মজা, অপমান করার চেষ্টা করলেও সব হজম করে নিতাম। কিন্তু ক্যাপ্টেন হওয়ার পর নিজের কথা নয়, মাঠে ও মাঠের বাইরেও ভাবতে হতো পুরো টিমের কথা। কিন্তু প্রথম প্রথম যখন জোর করে এভাবে ভাবার চেষ্টা করতাম, তখন বেশ ভয় লাগত। তখন নিজেকে বোঝাই, অযথা চাপ নিও না, কাজটা একই। মাঠে ও মাঠের বাইরে দৃষ্টান্ত স্থাপন করো।"
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "সবচেয়ে বড় কথা, ভুল করলে হাত তুলে তা স্বীকার করে নাও এবং সে জন্য ক্ষমা চেয়ে নাও। কারণ, দায়িত্ব বেড়ে গেলে, সিনিয়র খেলোয়াড় হয়ে গেলে নিজের ভুল স্বীকার করাটা বেশ কঠিন হয়ে ওঠে। অধিনায়ক হওয়ার পর আমি এটাই শিখেছি। ভুল হতেই পারে। অনেক বড় বড় ফুটবলাররাও ভুল করে। কিন্তু সে যদি ক্যাপ্টেন হয় এবং সমস্ত অভিযোগের তীর নিজের দিকে নিতে প্রস্তুত থাকে, তা হলে ড্রেসিং রুমের মানসিকতাই পাল্টে যায়।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন