ভারতের জার্সিতে বৃহস্পতিবার জীবনের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন সুনীল ছেত্রী। বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে কুয়েতের বিরুদ্ধে খেলেই অবসর নেবেন সুনীল। যুবভারতীতে সমর্থকদের মত তিনিও কি আবেগে ভাসবেন! এদিন ম্যাচের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে সেই প্রশ্নের উত্তরে সুনীল জানালেন, 'কয়েকদিন ধরে আবেগ নিয়ে আমাকে অনেক প্রশ্ন করা হয়েছে। আমি এই উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত। আবেগ তো থাকবেই। তবে সেসব দূরে ঠেলে দিয়ে ম্যাচ নিয়েই ভাবছি। আমাদের ড্রেসিংরুমেও বাড়তি আবেগ ঢুকতে দিইনি। এটাকে ভারত বনাম কুয়েত ম্যাচ হিসেবেই দেখা হোক।
সুনীল আরও বলেন, আমি চাইব শেষ ম্যাচ থেকে দলের জন্য ৩ পয়েন্ট তুলতে। ক্যাম্পে কেউ আমরা আবেগ নিয়ে বাড়তি কথা বলিনি। বরং শিবিরটাকে উপভোগ করেছি। আমাদের সামনে এখন শুধুই কুয়েত ম্যাচ। যা আমাদের ভাল খেলে জিততে হবে। আমি বেশ কয়েকবার এখানে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করেছি। এমন অনেকজন এখানে রয়েছে যাদের আমি গত ২০ বছর ধরে দেখছি। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে এবার ম্যাচে ফোকাস করতে হবে। আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ম্যাচ। এর থেকে ভাল অবসরের মঞ্চ হতেই পারত না। আমি মানসিকভাবে শান্তিতে আছি। নিজের সবটা উজাড় করে দিয়েছি। আমরা কাল ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারব কিনা সেটা সময়ই বলবে। তবে আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। আমি গোল পেলাম কী না পেলাম বড় কথা নয় দল যাতে জেতে সেটাই আসল।'
সুনীলের পরবর্তী জামানায় কে হবেন কে হবেন ভারতের নম্বর নাইন? এর উত্তরে সুনীল জানালেন, 'মনবীর, ডেভিড, শিবশক্তির মতো ফুটবলাররা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যে কেউ ওই জায়গায় খেলতে পারে। সবাই তৈরি। দুঃখের বিষয়, আইএসএলে কেউ ওই পজিশনে খেলার সুযোগ পায় না। তবে জাতীয় দলে ওই পজিশনে খেলার সুযোগ আছে। প্রত্যেকে নিজেকে প্রমাণ করতে তৎপর।’
বৃহস্পতিবার কুয়েতের বিরুদ্ধে জিতলে ভারত শুধু ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে প্রবেশ করবে তাই না, একই সঙ্গে এশিয়ার পাঁচটি শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেলতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়া জাপান দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দলগুলির বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাবে ভারত। সেটা হলে অবসর ভেঙে কি আবার মাঠে ফিরবেন সুনীল? এর উত্তরে সুনীল বললেন, ' না সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তবে সময়ই পেলেই গ্যালারিতে বসে ভারতীয় দলের ম্যাচ দেখব। যেখানে ভারতীয় দল যাবে সেখানেই যাওয়ার চেষ্টা করব।'
অবসরের পর কোচিং করাবেন? এই প্রসঙ্গে সুনীল বলেন, 'আমি কিছুতেই কোচ হব না। কোচ হওয়া মোটেই সহজ কথা নয়। বিগত ১৯ বছর অ্য়ালার্ম ক্লকের আওয়াজেই ঘুম ভেঙেছে। প্রতিদিন ভোর সাড়ে ছ'টায় উঠেছি। কোচিংয়ে আমাকে দেখবেনই না। থেকে পাঁচ বছর আগে, আমি এই লোকটাকে (ভারতীয় কোচ ইগর স্টিমাচ) ভারতের কোচ হতে দেখেছিলাম। তরুণ, সুদর্শন। এখন ওঁর অবস্থা দেখুন। কত বয়স মনে হচ্ছে।'
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনের শেষে সবাই সুনীলের উদ্দেশ্য হাততালি দিয়ে বিদায় জানালেন তাঁকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন