কলকাতায় এলেই শচীন তেন্ডুলকরের ঠিকানা হয় প্রাক্তন সিএবি সচিব সমর পালের বাড়ি। উত্তর কলকাতার সমরের বাড়িতে ক্রিকেট দেবতার ভুঁড়ি ভোজ অকল্পননীয়। ৪ বছর আগে শচীন শেষবার কলকাতায় আসেন আর সমর পালের বাড়িতে যান।
এই নিয়ে সমরবাবু বলেন, 'সচিনকে আমি চিনি যখন ওর ১৪ বছর বয়স তখন থেকে। আমার পুরোনো বন্ধু দিলীপ বেঙ্গসরকার আমাকে নিয়ে যায় মুম্বইয়ের জিমখানা স্টেডিয়ামে। দেখলাম খুব জোড়ে জোড়ে শট মারছে। দিলীপ বলল এই ছেলেটাকে বোম্বে টিমে খেলানো যাবে? বললাম এই মুহূর্তে? বললো হ্যাঁ'।
তিনি আরও বলেন, 'অন্য নির্বাচকরা রাজি না থাকলেও ওকে জোড় করে দিলীপ খেলালো আর প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করলো। পরের বছর কলকাতায় ম্যাচ খেলতে এলো সে। বেঙ্গসরকার বলল ওর দেখা শোনা করো। আমার বাড়িতে থাকল। শচীন এখানকার আলাদা মাটির শিকড় কখনও ভোলেনি। সেই সময় থেকে এখনও অবধি কলকাতায় এলে আমার বাড়িতে এসে খাওয়া দাওয়া করবেই। চিংড়ির মালাইকাড়ি আর ভেটকি মাছের পাতুরি ওর প্রিয়, মটন মাঝেমধ্যে খায়।'
এরপর সমর পাল জানালেন, 'যখন ভারতীয় দল থেকে ওকে না জানিয়ে নির্বাচকরা ক্যাপ্টেন্সি কেড়ে নেয় তখন ওর বক্তব্য ছিল জানিয়ে করতে পারত। কিন্তু ও কখনও ভেঙে পড়েনি। যেমন টেনিস এলবো হওয়ার সময়েও ভেঙে পড়েনি। আর কলকাতার সঙ্গে ওর একটা আত্মার যোগ ছিল। ইডেন ওকে বরাবর সম্মান করত।'
প্রাক্তন সিএবি কর্তা জানালেন, 'ইডেনে যখন আমি ওকে এরিয়ানের হয়ে খেলতে বলি আমাকে জিজ্ঞাসা করে কত লোক হবে? আমি বলি মাঠ ভরবে। সেটাই হয়েছিল। ৭৫ হাজারের ইডেন সেই সময়ে ভরে যায়। আমার মনে হয় না কারোর জন্য এমন হতে পারতো বলে। শচীন মানুষকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করতো।
পাশাপশি তিনি বলেন, 'খেলার সঙ্গে ও কোনোদিন আপস করেনি। কেনিয়ার সঙ্গে একবার ইডেনে খেলা, আমাকে বললো তুমি লাঞ্চটা ইডেনে নিয়ে এসো। আমি বললাম তুমি মাঠে নামবে এতো রিচ খেও না। ফ্লাইট তো পরের দিন ম্যাচ শেষে আমার বাড়িতে গিয়ে খেও। বললো নিয়ে আসো না কিছু হবে না। লাঞ্চ করল চিংড়ির মালাইকাড়ি দিয়ে এরপর সেঞ্চুরিও করলো'।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন