বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার হারের কোনো নজির নেই। কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আগে এই পরিসংখ্যান ঘোরাফেরা করছিল প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমেই। এর আগে ১৯৩০, ১৯৮৬, ১৯৯০ ও ২০১৪ সালে সেমিফাইনাল খেলে প্রতিটিতেই জয় পেয়েছিল আলবিসেলেস্তেরা। কাতার বিশ্বকাপেও সেই ধারা বজায় থাকলো। আরও একটি সেমিফাইনাল জিতে ষষ্ঠ বারের জন্য বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিল আর্জেন্টিনা। গত বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে হারের মধুর বদলা নিল নীল-সাদা জার্সিধারীরা। মেসি-আলভারেজ যুগলবন্দিতে ৩-০ গোলে মড্রিচের ক্রোয়েশিয়াকে হারালো আর্জেন্টিনা।
লড়াইটা ছিল 'এলএম টেন' বনাম 'এলএম টেন'-এর। আর্জেন্টিনার প্রতিটি ফুটবলার যখন জানতে থাকে তাঁরা মেসির জন্য বিশ্বকাপ জিততে চান, তখন পেরিসেচরাও জানান মড্রিচের জন্য সবকিছু করতে রাজি তারা। মড্রিচের হাত ধরেই গত বিশ্বকাপে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। তবে সেবার গোল্ডেন বল নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদের ব্যালন ডি'অর জয়ী মিডফিল্ডারকে। সেই মড্রিচ কার্যত একাই খেললেন এদিন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে বাকিরা বিশেষভাবে ছাপ ফেলতে পারলেন না। ২০১৪ বিশ্বকাপের পর ফের একবার ফাইনালে উঠলো আর্জেন্টিনা। ফাইনালে উঠলেন লিওনেল মেসি। কেরিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে মেসি কি পারবে আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে?
শুরু থেকেই এদিন আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে ইউরোপের ক্ষুদ্র দেশটি। প্রথম ৩০ মিনিট বেশিরভাগ সময়ই বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখেন মড্রিচরা। তবে এই অর্ধেরই শেষ ১৫ মিনিটে ম্যাচের ছবি বদলে দেয় আলবিসেলেস্তেরা। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় তারা। মড্রিচরা আর কামব্যাক করতে পারেননি।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। এই গোলের সাথে সাথেই গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে পেছনে ফেলে আর্জেন্টিনার জার্সিতে সর্বোচ্চ বিশ্বকাপ গোল করার নজির গড়ে ফেললেন পিএসজি মহাতারকা। লীড পাওয়ার পাঁচ মিনিট বাদে ফের গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। এবার গোল করেন জুলিয়ান আলভারেজ।
দ্বিতীয়ার্ধের ৬৯ মিনিটে লিওনেল মেসির পাস থেকে দুর্দান্ত ফিনিশিং করেন আলভারেজ। ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় এবং চলতি বিশ্বকাপে তৃতীয় গোলটি পেয়ে যান তিনি। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের নিরিখে দিয়েগো মারাদোনার পাশে বসে যান মেসি। ৩-০ ব্যবধানের লীড শেষ পর্যন্ত বজায় রেখে ফাইনালে জায়গা করে নেয় আর্জেন্টিনা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন