১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপের আসর বসে উরুগুয়েতে। সেবার আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পেরেছিল স্বাগতিকরাই। পরের দুই বিশ্বকাপে অংশ নেয়নি উরুগুয়ে। প্রত্যাবর্তন ঘটায় আবার সেই ১৯৫০ সালে। সেবার ব্রাজিলকে পেছনে ফেলে ফের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ে। এরপর আরও ১১ বিশ্বকাপে অংশ নিলেও মাত্র তিনটিতে সেমিফাইনাল পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পেরেছে তারা। তবে গত দেড় দশক ধরে উরুগুয়ের জাতীয় ফুটবল দলের আক্রমণ ভাগ সামলাচ্ছেন নর্দান সাল্টোতে মাত্র ২১ দিনের ব্যবধানে জন্ম নেওয়া এমন দুই মহাতারকা, যারা তাদের ফুটবলের জাদুতে মুগ্ধ করেছেন বিশ্ববাসীকে। উরুগুয়ের দুই সেরা গোলদাতা এডিনসন কাভানি এবং লুইস সুয়ারেজ সম্ভবত তাদের শেষ বিশ্বকাপেই মাঠে নামতে চলেছেন কাতারে। সাফল্য আসুক বা না আসুক, এই দুই মহাতারকা ফুটবলকে যা দিয়েছেন তাতে আজীবন 'মহানায়ক' হয়ে থাকবেন স্বদেশীদের কাছে।
সেলেস্তে জাতীয় দলের ইতিহাসে দুই সেরা গোলদাতার মধ্যে সুয়ারেজ ১৩৪ ম্যাচে গোল করেছেন ৬৮ টি। কাভানি ১৩৩ ম্যাচে গোল করেছেন ৫৮ টি। ১৫ বছরে এই দুই স্তম্ভের হাত ধরে ২০১১ সালে কোপা আমেরিকা জয়ের পাশাপাশি ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় উরুগুয়ে।
উরুগুয়ের এই দুই নায়ক তাদের চতুর্থ বিশ্বকাপে মাঠে নামতে চলেছেন। ইএসপিএন সাংবাদিক ডিয়েগো মুনোজ এএফপিকে বলেছেন তাঁরা "সেলেস্তের ইতিহাসে সেরা ফরোয়ার্ড জুটি। তাঁরা তাঁদের অহংকারকে একপাশে রেখে, সর্বদা দলকে অগ্রাধিকার দেয় এবং একে অপরকে শক্তিশালী করে। (তাঁরা) এমন একটি প্রজন্মের জন্য অপরিহার্য ছিল যারা জাতীয় দলকে ফিরিয়ে এনেছে এবং মানুষকে আশা যুগিয়েছে।"
ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজ ও এডিনসন কাভানি যে কাতারেই খেলবেন তাঁদের ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ, তা বয়স বিবেচনায় বলাই যায়। সব মিলিয়ে উরুগুয়েকে কাতারে বিশ্বকাপজয়ী হিসেবে খুব কম মানুষই ভাববে। বিশ্বকাপে সুয়ারেজের গোল সাতটি। কাতারে সুযোগ পেয়ে দুটি গোল করলে বিশ্বকাপে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোল করা অস্কার মিগুয়েজকে ছাড়িয়ে যাবেন। আক্রমণে এ দুই অভিজ্ঞর সঙ্গে থাকবেন ২৩ বছরের স্ট্রাইকরা ডারউন নুনেজ। লিভারপুল এই মরসুমেই তাঁকে দলে টানে। এছাড়া সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে রিয়ালে খেলা ফেদে ভালভার্দে, টটেনহ্যামে থাকা রদ্রিগো বেনতাকুর আছেন। অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার ডিয়েগো গোডিনের নেতৃত্বে বাকিরা কেমন করেন সেটি হবে দেখার বিষয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন