কলকাতায় আসছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আগামী ৪ জুলাই মোহনবাগানের তাঁবুতে পা রাখবেন তিনি। অতীতে মোহনবাগান তাঁবুতে পা রেখেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনা। পেলের কসমসের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলেছিল মোহনবাগান। এবার আরও এক বিশ্বকাপ জয়ীর পা পড়তে চলেছে মেরিনার্সদের শিবিরে।
শুধুমাত্র পেলে-মারাদোনা বা কাফু নয়, প্রাসাদের নগরী কলকাতায় পা রেখেছেন একাধিক কিংবদন্তি ফুটবলাররা। আজকের প্রতিবেদনে জেনে নেওয়া যাক সেই সব কিংবদন্তিদের।
১. লেভ ইয়াসিন - তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার কিংবদন্তি গোলকিপার লেভ ইয়াসিন দু'বার এসেছিলেন 'সিটি অফ জয়' কলকাতায়। ১৯৫৫ সালে ভারত সফরে এসেছিলেন ইয়াসিন। ভারতকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এরপর ১৯৭৩ সালে আইএফএ শিল্ড ফাইনালে প্রধান অতিথি হিসেবে আবার কলকাতায় আসেন লেভ ইয়াসিন।
২. টেরি পেইন - ব্রিটিশ কিংবদন্তি টেরি পেইন ১৯৭৬ সালে ক্রুক টাউন দলের সাথে কলকাতায় খেলতে আসেন।
৩. ভিলেম শ্রোইফ - তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার গোলরক্ষক ভিলেম শ্রোইফ ১৯৬৫ সালে রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে স্লোভান ব্রাতিস্লাভার হয়ে দুটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেছিলেন।
৪. পেলে এবং কার্লোস আলবার্তো পেরেইরা - দুই ব্রাজিলিয়ান বিশ্বকাপারই ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বরে কলকাতায় এসেছিলেন। মোহনবাগানের সাথে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেছিল কসমস এফসি। ১৯৭৭ সালের পর ফের ২০১৫ সালের অক্টোবরে ফের ভারত সফর করেন পেলে। এই সময়ে তিনি প্রায় সপ্তাহ খানেক কাটিয়ে গিয়েছেন ফুটবলের শহরে। এমনকি বাঙালির প্রধান উৎসব দুর্গাপূজাতেও সামিল হয়েছিলেন তিনি।
৫. এনজো ফ্রান্সকোলি, ভ্যালেন্সিয়া রামোস - ১৯৮২ সালে নেহেরু কাপের উদ্বোধনে উরুগুয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এই দুই মহাতারকা।
৬. জর্জ বুরুচাগা, কেরেকা - ১৯৮৪ সালে নেহেরু কাপে আর্জেন্টিনার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন বুরুচাগা এবং কেরেকা।
৭. লাজলো কিস - ১৯৮৪ সালে কলকাতায় নেহেরু কাপে হাঙ্গেরীর হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন কিস।
৮. ববি মুর - ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ববি মুর ১৯৮৪ সালের নেহেরু কাপ ফাইনালের প্রধান অতিথি ছিলেন।
৯. স্মোলারেক, বুঙ্কোল - এই দুই পোলিশ বিশ্বকাপার ১৯৮৪ সালে কলকাতায় নেহেরু কাপের ফাইনালে খেলেছিলেন।
১০. ইউসেবিও - ১৯৯০ সালে নেহরু কাপের ফাইনালে প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছিলেন পর্তুগীজ কিংবদন্তি ইউসেবিও।
১১. রোনাল্ড কোম্যান - ১৯৯১ সালে পিএসভি আইন্দহোভেনের হয়ে তিনটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেছিলেন হল্যান্ডের বিখ্যাত ফুটবলার রোনাল্ড কোম্যান।
১২. রজার মিলা - ক্যামেরুনের কিংবদন্তী স্ট্রাইকার মিলা মোহনবাগানের শতবর্ষ উদযাপনের সময় ডায়মন্ড ক্লাবের সাথে ম্যাচ খেলতে কলকাতায় এসেছিলেন।
১৩. গার্ড মুলার - ফুটবলের শহর কলকাতায় একাধিক বার পা পড়েছে বিশ্বকাপ জয়ী জার্মান কিংবদন্তীর। ২০০৫-এ জার্মানির খুদেদের দল নিয়ে আইএফএ শিল্ডে খেলতে এসেছিলেন তিনি। এরপর ২০০৯ সালে জার্মানির অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে নিয়ে কলকাতায় আসেন মুলার।
১৪. অলিভার কান - জার্মানির কিংবদন্তি গোলকিপার অলিভার কান বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে তাঁর বিদায়ী ম্যাচটিই খেলেছিলেন কলকাতার মাটিতে মোহনবাগানের বিপক্ষে।
১৫. দিয়েগো মারাদোনা - ফুটবল ঈশ্বর মারাদোনা কলকাতায় এসেছিলেন দু'বার। প্রথমবার তিনি এসেছিলেন ২০০৮ সালে। দ্বিতীয়বার মারাদোনা কলকাতার মাঠে এসেছিলেন ২০১৭ সালে। ফুটবলের রাজপুত্রকে অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জমাতে জড়ো হয়েছিল হাজার-হাজার মানুষ।
১৬. দিয়েগো ফোরল্যান: ২০১০ সালে কলকাতায় আসেন ২০১০ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল জয়ী উরুগুয়েন মহাতারকা দিয়েগো ফোরল্যান। ২০১০ সালে এই উরুগুয়ের তারকা ঘুরে গিয়েছেন কলকাতা থেকে। কলকাতা ও বাংলার ফুটবল ও ভারতের ফুটবলকে উৎসাহ দিতে কলকাতার মাটিতে হাজির ছিলেন ২০১১ কোপা আমেরিকা জয়ী এই ফুটবলার।
১৭. কার্ল হেইঞ্জে রুমিনিগে - জার্মানির প্রাক্তন অধিনায়ক রুমিনিগে ২০১০ সালে কলকাতা সফর করেছিলেন।
১৮. লিওনেল মেসি - অধিনায়ক হিসেবে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির যাত্রা শুরু কলকাতাতেই। ২০১১ সালে যুবভারতীতে প্রথমবার ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নেমেছিলেন লিও। ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি।
১৯. কাফু - গত বছরই কলকাতায় পা রাখেন জোড়া বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি কাফু। ৫২ বছর বয়সী প্রাক্তন ফুটবলার পুলিশ ফ্রেন্ডশিপ কাপ উদ্বোধনের পাশাপাশি চ্যারিটি ম্যাচে অংশ নেন। তাঁকে দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছিল তিলোত্তমায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন