দূষণের মহাসাগরে ভাসছে দেশের রাজধানী নয়াদিল্লি-সহ কলকাতা, মুম্বইয়ের মতো বেশ মেট্রো শহরগুলি। গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে দূষিত বাতাসে মুখ ঢেকেছে দিল্লি। মাত্রা ছাড়িয়েছে বাতাসের গুণমান বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী, দিল্লি-সহ দেশের বহু শহর ও অঞ্চলের একিউআই ‘খারাপ’ থেকে ‘অত্যন্ত খারাপ’ হয়ে উঠেছে। আর এই দূষিত বাতাসের সরাসরি প্রভাব পড়েছে চলতি ক্রিকেট বিশ্বকাপে।
১২ বছর পর ফের ভারতে ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেই বিশ্বকাপ চলাকালীন মাত্রাতিরিক্ত ‘খারাপ’ হয়ে উঠেছে দেশের হাওয়া। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা-সহ বিশ্ব ক্রিকেটের তাবড় তাবড় রথী-মহারথীরাও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজধানী দিল্লি সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদের ফসল পোড়ানোর জন্যই রাজধানীর বাতাসের এমন দুর্বিষহ দশা। প্রসঙ্গত, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় এই মুহূর্তে শীর্ষে রয়েছে দিল্লি, তৃতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা এবং ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে মুম্বই।
সোমবার দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ৩৮ নং ম্যাচে মুখোমুখি সংঘাতে নেমেছিল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। কিন্তু খেলার আগে রবিবার দিল্লির হাওয়া এতটাই খারাপ ছিল যে, দুই দেশের ক্রিকেটাররাই দলের চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী অনুশীলন বাতিল করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এমনকি শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে অনেক খেলোয়াড়কে হোটেলের ঘরেই বন্দি থাকতে হয়।
ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিতও মুম্বইয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, এই দূষিত পরিবেশ খেলার জন্য উপযুক্ত নয়। পাশাপাশি, এই বাতাসে শ্বাস নেওয়ায় বিশেষ করে শিশুদের শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এর আগে বেঙ্গালুরুতে একটি ম্যাচ খেলতে গিয়ে অনুশীলনের ফাঁকে ইনহেলার ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে ইংল্যান্ডের তারকা অল-রাউন্ডার বেন স্টোকসকে। তাঁরই সতীর্থ আরেক ইংরেজ সুপারস্টার জো রুটও শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে অসুবিধা হচ্ছে বলে স্বীকার করে নেন।
মুম্বইয়ে খেলতে গিয়ে রুট বলেন, এই বাতাসে শ্বাস নেওয়া মানে হাওয়া খাওয়ার মতো। মনে হচ্ছে যেন, শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়াই যাচ্ছে না।” প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি দিল্লিতেই। সোমবার ধোঁয়াশায় ছেয়ে থাকা অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মধ্যে ম্যাচটি কীভাবে হবে, সেই নিয়ে প্রাথমিক চিন্তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি সম্পন্ন করা গিয়েছে। তবে কলকাতা, মুম্বইয়ের মতো একাধিক শহরেও দূষণের মাত্রা চিন্তায় ফেলছে আইসিসি ও বিসিসিআইকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন