ভারতীয় বোলারদের নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করলো ইংল্যান্ডের দুই প্রধান অস্ত্র জো রুট এবং জনি বেয়ারিস্টো। তৃতীয় উইকেটে ৩১৬ বলে ২৬৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে এজবাস্টন টেস্টে ইংল্যান্ডকে জয় উপহার দিলেন এই জুটি। রুট অপরাজিত থাকলেন ১৪২* রানে এবং বেয়ারিস্টো ১১৪* রানে। দুই ব্রিটিশ ক্রিকেটারের সেঞ্চুরির সৌজন্যে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে এজবাস্টনে ঐতিহাসিক জয় অর্জন করলো ইংল্যান্ড।
এজবাস্টনে প্রথম তিন দিন ভারতীয় দল দাপট দেখালেও চতুর্থ দিনে ম্যাচের রাশ টেনে ধরে ইংল্যান্ড। চতুর্থ ইনিংসে ইংল্যান্ডকে লড়াইয়ের প্লাটফর্ম তৈরি করে দেন দুই ওপেনার ক্রলি এবং লিজ। দুই ওপেনারের গড়ে দেওয়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভারতীয় বোলারদের নাস্তানাবুদ করে রুট এবং বেয়ারিস্টোর যুগলবন্দিতে দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতে নেয় ব্রিটিশরা।
প্রথম ইনিংসে ভারতের গড়া ৪১৬ রানের জবাবে ২৮৪ রানেই অল আউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। যা দেখে একসময় মনে হওয়াটা স্বাভাবিক ছিলো ভারত সহজেই ব্রিটিশদের কোণঠাসা করবে। কিন্তু ব্র্যান্ডন ম্যাককুলামের শিষ্যরা ঘুরে দাঁড়ায় তৃতীয় ইনিংস থেকে। ইন্ডিয়াকে মাত্র ২৪৫ রানেই গুটিয়ে দেয় তাঁরা। তা সত্ত্বেও এজবাস্টনে চতুর্থ ইনিংসে ইংল্যান্ডের সামনে ছিলো ৩৭৮ রানের লক্ষ্য। ভারতের বিরুদ্ধে একমাত্র অস্ট্রেলিয়া ছাড়া কোনো দলই ৩০০-এর অধিক রান তাড়া করতে নেমে জিততে পারেনি। এজবাস্টনে এতো রান তাড়া করে জয়ের ইতিহাসও ছিলো না কোনো দলের। ইংল্যান্ড ১৯৮৮ সালে সর্বোচ্চ ২০৮ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিলো এই মাঠে। সবমিলিয়ে জয় অর্জন করতে হলে ইতিহাস গড়তে হতো ইংল্যান্ডকে। আর রুট বেয়ারিস্টোরা সেটাই করে দেখালেন।
চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করতে নেমে প্রথম উইকেটে ১০৭ রান সংগ্রহ করেন অ্যালেক্স লিজ এবং জ্যাক ক্রলি। ১০৭ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪৬ রান করে ক্রলি ফিরে যাওয়ার পর পরই ১০৯ রানের মধ্যে লিজ(৫৬) এবং ওলি পোপ(০) ফিরে যান। পর পর তিন উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়লেও রুট এবং বেয়ারিস্টো ইংল্যান্ডের রানের ঘোড়াকে টগবগিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। পঞ্চম দিনের শুরু থেকেই দিশাহীন বোলিং করতে থাকে ভারত। আর সেই সুযোগ নিয়ে একের পর এক বাউন্ডারিতে ইংল্যান্ডকে ক্রমশ জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান এই জুটি।
১৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৩৬ বলে ব্যক্তিগত শতরান পূর্ণ করেন জো রুট। ফ্যাব ফোরের মধ্যে স্মিথ, উইলিয়ামসন, কোহলিদের পেছনে ফেলে ২৮ তম শতরানটি পেয়ে যান তিনি। রুটের পর দুরন্ত শতরান জোড়েন বেয়ারিস্টোও। ১২টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১৩৮ বলে ব্যক্তিগত শতরান পূর্ণ করেন বেয়ারিস্টো। প্রথম ইনিংসে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০৬ রান করেছিলেন বেয়ারিস্টো। এজবাস্টন টেস্টে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন তিনিই। জো রুটের অপরাজিত ১৪২* রান এবং বেয়ারিস্টোর অপরাজিত ১১৪* রানের সৌজন্যে ৭ উইকেটে এজবাস্টন টেস্ট জিতে নেয় ইংল্যান্ড।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন