রোমহর্ষক ম্যাচে দিল্লির বিরুদ্ধে জয় অর্জন করে আইপিএল ২০২১-এর ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্স। চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে প্রথম কোয়ালিফায়ারে যে ধাক্কা খেয়েছিলো দিল্লি ক্যাপিটালস তা সামাল দিয়ে আর ওঠা হলোনা। লীগ টেবিলের ফার্স্ট বয়দের সফর শেষ হলো দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে।
এলিমিনেটরে আরসিবিকে উড়িয়ে আসা কলকাতা বাজিমাৎ করলো দিল্লির বিপক্ষেও। বোলারদের আঁটোসাঁটো বোলিংএর সৌজন্যে এদিন দিল্লিকে মাত্র ১৩৫ রানেই বেঁধে ফেলেন মর্গ্যান বাহিনী। রান তাড়া করতে নেমে ভেঙ্কটেশ আয়ার(৫৫), শুবমন গিল(৪৬) দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিলেও শেষ মুহূর্তে ক্রমাগত উইকেট পতনের কারণে নাইটদের সামনে জেতার রাস্তা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবে শেষ মুহূর্তে ত্রাতা হয়ে উঠলেন রাহুল ত্রিপাঠি। অশ্বিনকে ছক্কা হাঁকিয়ে এক বল হাতে রেখেই কলকাতাকে তৃতীয় বার ফাইনালের টিকিট এনে দেন ত্রিপাঠি।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম থেকেই দিল্লি বোলারদের ব্যাক ফুটে ঠেলে দেন দুই নাইট ওপেনার শুবমন গিল এবং ভেঙ্কটেশ আয়ার। প্রথম উইকেটে ৯৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে কার্যত নিশ্চিত জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন এই জুটি। ভেঙ্কটেশ আয়ার ৪ টি বাউন্ডারি এবং ৩ টি ওভার বাউন্ডারির মাধ্যমে ৪১ বলে ৫৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। শুবমন গিল ৪৬ বলে ৪৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস উপহার দেন। নীতিশ রানা ১৩ রান করে ফিরে যাওয়ার পর এবং শুবমন গিলের উইকেট পতনের পর সহজ ম্যাচ কঠিন হয়ে দাঁড়ায় কলকাতার। একে একে দীনেশ কার্তিক, ইয়ন মর্গ্যান, সাকিব আল হাসান, সুনীল নারিনেরা ফিরে যান রানের খাতা না খুলেই। একা দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল ত্রিপাঠি। শেষ মুহূর্তে নাইটদের রক্ষাকর্তা হয়ে উঠলেন তিনি। ১১ বলে ১২* রানে অপরাজিত রয়েছেন ত্রিপাঠি এবং কেকেআর ম্যাচ জিতেছে ৩ উইকেটে।
নাইটদের আঁটোসাঁটো বোলিংএর সামনে শারজায় হাত খুলে খেলতেই পারেননি দিল্লির ব্যাটাররা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৩৫ রানই সংগ্রহ করেন ঋষভরা। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হলেও পৃথ্বী শ ফিরে যাওয়ার পরেই রানের গতিতে ছেদ পড়ে দিল্লির। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই পৃথ্বী শ'কে ফিরিয়ে দিল্লি শিবিরে ধাক্কা দেন বরুন চক্রবর্তী। চোট কাটিয়ে ফিরে আসা মার্কাস স্টয়নিস ২৩ বলে মাত্র ১৮ রান করে শিবম মাভীর শিকার হয়ে ফিরে যান। অধিনায়ক ঋষভ পন্থেরও ব্যাট চলেনি এদিন। ৬ বলে ৬ রান করেই ড্রেসিংরুমে ফিরে যান ঋষভ। দিল্লি অধিনায়ককে ফেরান লকি ফার্গুসন। ওপেনার শিখর ধাওয়ান এই ম্যাচে ৩৯ বল খেললেও হাত খুলতে পারেননি। শিখর ৩৬ রান করে বরুন চক্রবর্তীর বলে শাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। শেষের দিকে ১০ বলে ১৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন শিমরন হিটমায়ার এবং ২৭ বলে অপরাজিত ৩০* রানের ইনিংস খেলে দিল্লিকে সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যান শ্রেয়স আয়ার।
নাইট রাইডার্সের বোলাররা আবারও এক অনবদ্য বোলিংএর নিদর্শন রেখেছেন। দিল্লির ব্যাটারদের হাত খুলে খেলার কোনোরকম সুযোগ দেননি তাঁরা। কলকাতার মিস্ট্রি স্পিনার বরুন চক্রবর্তী ৪ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন জোড়া উইকেট। এছাড়াও ৪ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন লকি ফার্গুসন। শিবম মাভী তাঁর নির্ধারিত ৪ ওভারে মাত্র ২৭ রান দিয়েছেন এবং তুলে নিয়েছেন একটি উইকেট। উইকেট না পেলেও চার ওভারে মাত্র ২৮ এবং ২৭ রান দিয়েছেন যথাক্রমে শাকিব আল হাসান এবং সুনীল নারিন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন