'দুই গ্যালারির একই স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর'। নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রইলো কলকাতার যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গন। ইষ্টবেঙ্গল মোহনবাগানের চিরকালীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে অভ্যস্ত শহর, রাজ্য আজ দেখলো কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে পথ হাঁটা। হাজারো পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে একসাথে বিক্ষোভ দেখালেন কলকাতার তিন প্রধানের সমর্থকরা। আজ এখানে কোনও লাল হলুদ নেই, নেই কোনও সবুজ মেরুন, নেই কোনও সাদা কালো। সব ফুটবল প্রেমীদের লড়াইয়ের মুখে আটক করা সমর্থকদের প্রিজন ভ্যানে তুলেও জনতার চাপে তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করেই শেষে শুরু হয় মিছিল।
এদিন বহু চেষ্টা সত্ত্বেও ক্রীড়াপ্রেমীদের যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনের কাছ থেকে সরানো যায়নি। প্রাথমিক পুলিশি বাধা এড়িয়ে বেঙ্গল কেমিক্যাল থেকে যুব ভারতীর দিকে মিছিল শুরু করেন তিন প্রধানের সমর্থকরা। এমন কি বহু সাধারণ মানুষ রাস্তায় সহমর্মিতা দেখাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পরেন। তাঁদেরও পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে সরে যেতে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে এদিন রুবির মোড়, কৈখালীর মোড়, উল্টোডাঙ্গা অঞ্চল থেকে বহু বিক্ষোভকারীদের যুব ভারতীর দিকে আটকে যাওয়া আটকে দিয়েছে পুলিশ। এই মুহূর্তে মিছিল চললেও মাঝে মাঝেই পুলিশের পক্ষ থেকে মিছিল ভেঙে দেবার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তা সত্ত্বেও হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমী ভীড় করেন যুব ভারতী চত্বরে।
নিরাপত্তার প্রশ্নে ইষ্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগানের মধ্যে ডার্বি ম্যাচ বাতিলের পরেই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল সমর্থকরা। যার জেরে খেলা বাতিল করা হলেও রবিবার যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সামনে বিক্ষোভের ডাক দেয় কলকাতার তিন প্রধানের সমর্থকরা। বিক্ষোভকারীদের মুখে উঠে আসে ‘জাস্টিস ফর আর জি কর শ্লোগান।’
এদিন বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, পুলিশ লাঠি চার্জ করেছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের গায়ে হাত তুলেছে। সংবাদমাধ্যমে এক বিক্ষোভকারী জানান, আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আসিনি। আমরা শুধু বলেছি উই ওয়ান্ট জাস্টিস। সেখানে পুলিশ এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
অন্য এক বিক্ষোভকারী বলেন, বাঙালির আবেগ নিয়ে খেলা হচ্ছে। ডারবির সময় এত পুলিশ থাকে না। আজ পুলিশে পুলিশে এলাকা ছয়লাপ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা কি এখানে ভাংচুর করতে এসেছি? আমরা খেলা বন্ধ করার প্রতিবাদ করছি। আমাদের একটাই কথা উই ওয়ান্ট জাস্টিস।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল ২০০ মিটারের মধ্যে কিছু করা যাবে না। আমরা সেই নির্ধারিত ২০০ মিটার বাদ দিয়েই প্রতিবাদ করছিলাম। সেখানে পুলিশ এমনভাবে লাঠি চালিয়েছে যে মহিলারাও আহত হয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন