রবিবার যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সামনে ডার্বি বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে হওয়া জমায়েত ভাঙতে ফুটবলপ্রেমীদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পুলিশের এমন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী ঋজু ঘোষাল। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির সম্ভবনা।
অন্যদিকে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে এক যুবক বাড়ি ফেরেননি বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। এই বিষয়ে দ্রুত শুনানি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তাঁর পরিবার।
পুলিশি নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে ডুরান্ড ম্যাচের ডার্বি বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। ফলে রবিবার ডুরান্ড কাপে ইষ্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগানের খেলা বাতিল হয়ে যায়। এই ঘটনাতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ফুটবলপ্রেমীরা। শনিবারই ডাক দেওয়া হয় রবিবার ম্যাচের সময় উভয় দলের সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখাবেন যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সামনে। মহমেডান সমর্থকরাও এই বিক্ষোভে সামিল হবে বলে জানান। ফুটবলপ্রেমীদের অভিযোগ, শনিবার রাত থেকেই বিক্ষোভের উদ্যোক্তাদের ফোন করে বিক্ষোভ বাতিল করার কথা বলা হয়েছে পুলিশের তরফে।
রবিবার বিকেল চারটের আগে থেকেই ফুটবলপ্রেমীরা জড়ো হতে শুরু করেন যুব ভারতীর আশেপাশে। যদিও তার আগে থেকেই এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। রবিবার বিকালে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সল্টলকের স্টেডিয়ামের কাছে কাদাপাড়া মোড়। কাদাপাড়ার কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। পুলিশ বেশ কয়েক বার লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায় আন্দোলনকারীদের দিকে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশ লাঠি চার্জ করেছে, লাঠি উঁচিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ভাঙার চেষ্টা করেছে। মহিলাদের গায়ে হাত তুলেছেন পুরুষ পুলিশ কর্মীরা।
বার বার পুলিশি বাধার সামনে পড়লেও এদিন নিজেদের জায়গা থেকে নড়েননি বিক্ষোভকারীরা। একসময় পুলিশ দুই দলের কিছু সমর্থকদের আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলে। যদিও মুহূর্তের মধ্যে পুরো প্রিজন ভ্যান ঘিরে ধরে ফুটবলপ্রেমীরা। প্রবল বিক্ষোভের মুখে আটক করা সমর্থকদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা প্রশ্ন তোলেন, তাদের আটকাতে এত পুলিশ, কিন্তু সেদিন আর জি করে ভাঙচুরের সময় পুলিশের এই সক্রিয়তা কোথায় ছিল? এতো পুলিশ থাকলে নিরাপত্তা না দিতে পারার কারণ জানিয়ে কেন খেলা বাতিল করা হল?
অন্যদিকে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে জানান, প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা এক যুবকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের কাছে এই বিষয়ে দ্রুত শুনানির আর্জি জানান তিনি। তবে মামলা দায়েরের পর রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ওই যুবক পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন