টেনিস জগতে এক বর্ণময় অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি। পেশাদারী টেনিসকে বিদায় জানালেন কিংবদন্তী সেরেনা উইলিয়ামস। ইউএস ওপেনের মধ্যে দিয়েই শুরু হয়েছিল পথচলা। ইউএস ওপেনেই বিদায়।
১৯৯৮ সালে ইউএস ওপেনে অভিষেক বছরে তৃতীয় রাউন্ডে বিদায় নিয়েছিলেন সেরেনা। বিদায়ী গ্র্যান্ড স্ল্যামে তৃতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার আইলা টমলিয়ানোভিচের কাছে শেষ সিঙ্গলসে হারলেন ৫-৭, ৭-৬, ৬-১।
ওপেন যুগে মহিলাদের সিঙ্গলসে অস্ট্রেলিয়া ওপেনে ৯২ টি ম্যাচ জিতেছেন সেরেনা, রোলাঁ গারোতে জিতেছেন ৬৯ টি ম্যাচ, উইম্বলডন জিতেছেন ৯৮ টি ম্যাচ, ইউএস ওপেনে জিতেছেন ১০৮ টি ম্যাচ। সেরেনার ঝুলিতে রয়েছে ২৩ টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। যা কিনা ওপেন যুগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০০৩, ২০০৫, ২০০৭, ২০০৯, ২০১০, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতেন তিনি। রোলাঁ গারো চ্যাম্পিয়ন হন ২০০২, ২০০৩ এবং ২০১৫ সালে। উইম্বলডন জেতেন ২০০২, ২০০৩, ২০০৯, ২০১০, ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে। ইউএস ওপেন জেতেন ১৯৯৯,২০০২, ২০০৮, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে।
সেরেনা আর অনুপ্রেরণা যেনো সমার্থক। লস অ্যাঞ্জেলেসের এক দরিদ্র পরিবার থেকে সেরেনা এবং তাঁর দিদি ভিনাসের উঠে আসা, গলিতে টেনিস খেলা এবং সেখান থেকে একের পর এক গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়, শ্বেতাঙ্গদের চোখে চোখ রেখে কথা বলা - টেনিস বিশ্বে অ্যাফ্রো-আমেরিকানদের কাছে তিনি যেনো অনুপ্রেরণার সংজ্ঞা।
কোকো গফ বলেন, "সেরেনার আগে টেনিসে এমন কোনও খেলোয়াড় ছিল না যাঁর সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পেতাম। টেনিস খেলতে খেলতে বেড়ে ওঠার সময় কোনও দিন সমস্যা হয়নি। কারণ জানতাম, বিশ্বের এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড়কে অনেকটা আমার মতোই দেখতে। এই বিশ্বে কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে জন্মালে, একটু কমেই খুশি থাকতে হয়। সেরেনা শিখিয়েছে, ও কম পেয়ে থেমে যেতে রাজি নয়।"
শুধু টেনিস জগত নয়, সেরেনা ক্রীড়াক্ষেত্রের এমন উচ্চতায় নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন, যা দেখে তাঁর কাছ থেকে সবাই শিখতে চায়, সবাই অনুপ্রাণিত হতে চায়। ইউএস ওপেন শুরুর আগে রাফায়েল নাদাল বলেন, "সেরেনা শুধু টেনিস খেলোয়াড়ই নয়, বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একজন ক্রীড়াবিদ।" ড্যানিল মেদভেদেভ বললেন, "আগামী ১০০ বছরেও সেরেনাকে নিয়ে কথা হবে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন