ভারতীয় মহিলা দলের ফুটবলার সঙ্গীতা সোরেন। দু'বার দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে খেলেছেন ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা এই মহিলা। সেই সঙ্গীতাই এখন অর্থের অভাবে ধানবাদের একটি ইট ভাটায় দৈনিক মজুরির কাজ করছেন। সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করলে মজুরি পান ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে এই কাজ করতে হচ্ছে বিশ্বের সামনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা ২০ বছরের এই তরুণীকে। এই খবর সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গেছে ক্রীড়া মহলে।
গত বছরেই লকডাউনের সময় সাহায্য চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন সঙ্গীতা। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন তাঁকে সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। তবে সেই আশ্বাস বাস্তবে পরিণত হয়নি। পরিবারের পেট চালাতে অবশেষে ইট ভাটার কাজে যোগ দেন তিনি।
চরম আর্থিক অনটনের মধ্যেও থেকে সঙ্গীতা তাঁর প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়েছেন। ২০১৮-১৯ মরশুমে মহাদেশীয় স্তরে ভুটান এবং থাইল্যান্ডের সঙ্গে অনুর্ধ্ব ১৭ ভারতীয় দলের স্কোয়াডে ছিলেন। সিনিয়র দলেও ডাক পেয়েছিলেন এই তরুণী। তবে কোভিড-১৯ এর কারণে সেই খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।
সংবাদমাধ্যমে সঙ্গীতা সোরেনের কথা জানতে পেরে অবিলম্বে তাঁর জন্য আর্থিক সহায়তার বন্দোবস্ত করেছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়া দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেণ রিজেজু। এক ট্যুইট বার্তায় তিনি জানিয়েছেন - অবিলম্বে সঙ্গীতার জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করছে তাঁর দপ্তর।
সঙ্গীতার বাবা দুবা সোরেন বার্ধক্য জনিত কারণে চোখে ভালো দেখতে পান না। তাঁর বড় ভাই একজন দিন মজুর, যাঁর লকডাউনের কারণে কাজ পাওয়া কঠিন হচ্ছে। তাই এই সময় পরিবারকে সাহায্য করতে ইট ভাটায় কাজ করছেন সঙ্গীতা।
এই সংবাদ জাতীয় মহিলা কমিশনের সামনে আসে। জাতীয় মহিলা কমিশন চিঠি পাঠায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্য সচিব এবং সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে। কমিশন আর্থিক সাহায্যের জন্য অনুরোধ করছে ঝাড়খণ্ড সরকারকে। কমিশন জানিয়েছে, "সঙ্গীতার এই অবস্থা দেশের কাছে লজ্জার ও অস্বস্তির। শুধু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশকেই তিনি প্রতিনিধিত্ব করেছেন তা নয়, ঝাড়খণ্ডেরও প্রতিনিধি ছিলেন তিনি।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন