নিজের কেরিয়ারের একদম শেষ সময়ে উপস্থিত ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। এই সময়ে এসে নিজের ফুটবল জীবন নিয়ে খানিকটা আবেগপ্রবণ তিনি।
সুনীলের বাবা কেবি ছেত্রী ছিলেন সেনাবাহিনীতে। তাই আর্মি পাবলিক স্কুলে পড়তেন সুনীল ছেত্রী। পড়াশোনা এবং শৃঙ্খলা, দুটো ব্যাপারেই যথেষ্ট সুনাম ছিল তাঁর। সেখানকার ছাত্র হওয়ার পাশাপাশি স্কুলের ফুটবল টিমের অপরিহার্য অঙ্গও ছিলেন তিনি। সেই থেকে তাঁর ফুটবলজীবন শুরু। কিন্তু যে ছেলেটি একদিন ভারতের হয়ে ফুটবল খেলার স্বপ্ন দেখে, তাঁর কাছে কেবল স্কুলের টিমে খেলা যথেষ্ট ছিল না বোধহয়।
সুনীল এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি জা্ননা, আর্মি পাবলিক স্কুলের একজন ছাত্র ছিলাম। কিন্তু আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম কোনও বড় স্কুল টুর্নামেন্টে বেশি খেলার সুযোগ পেত না। হয় গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়, নয়তো কোয়ার্টার ফাইনাল। তখন অন্য স্কুলগুলো আমাদের চেয়েও অনেক ভাল খেলত।
তিনি আরও বলেন, ফলে বাবা-মাকে না জানিয়েই আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি এবং ট্রান্সফার সার্টিফিকেটের জন্য স্কুলে আবেদন করে দিই। যদিও সিদ্ধান্তটা খুব বোকবোকা ছিল। কিন্তু এখন আর সেজন্য কোনও আফসোস নেই আমার। আমি তখন মমতা মডার্ন স্কুলের হয়ে বড় টুর্নামেন্টে খেলতে চাইতাম। সেজন্যই সিদ্ধান্তটা নিই। স্কুল বদলের পর দেখলাম, দুই স্কুলের মধ্যে পড়াশোনায় খুব একটা তফাৎ তেমন নেই। তবে আর্মি স্কুল আর মমতা মর্ডার্ন স্কুল নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির তফাৎ ছিল প্রচুর। কিন্তু আমি তো বহু মানুষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তখন স্কুল বদলের সিদ্ধান্ত নিই। তাই দেওয়ালে পিঠ ঠেকেই ছিল আমার।
সুনীল বলেন, বাবা-মায়ের কাছে অনেক কিছু প্রমাণ করার ছিল। আমি যে একই সঙ্গে পড়াশোনা ও খেলা চালিয়ে যেতে পারি এবং একা একা জীবনযাপনও করতে পারি, এ সব কিছুই প্রমাণ করার ছিল। তাই দিল্লিতে থাকলেও বাড়িতে থাকতাম না। স্কুলের ফুটবলারদের সঙ্গে হস্টেলে থাকতাম। দু’বছর হস্টেলে ছিলাম। আমার এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি ছিলেন না আমার বাবা-মা।
এখানেই শেষ নয় তাঁর স্কুলের গল্প। পাশাপাশি তিনি বলেন, “ইউনিফর্ম তৈরি রাখা থেকে শুরু করে পড়াশোনার বই-খাতা জোগাড় সব আমি নিজে করতাম। খেলার পাশাপাশি পড়াশোনায় যখন মন দিতে শুরু করি, তখন বুঝতে পারি ব্যাপারটা এমন কিছু কঠিন নয়। তাই সেই সময়ের কথা ভেবে আমার কখনও আফসোস হয়নি”।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন