টোকিও অলিম্পিকের হাইজাম্পের ফাইনালটা রূপকথার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। রোমহর্ষক ফাইনালে খেলোয়াড় সুলভ মানসিকতার অনন্য নজির গড়লেন কাতারের মুতাজ বারশিম। ফাইনাল দুই স্পটের জন্য লড়াই করছিলেন বারশিম এবং ইতালির জিয়ানমার্কো তামবেরি। ফাইনাল টাইব্রেকার জাম্পের আগে চোটের কারণে কেরিয়ার শেষ হতে যাওয়া তামবেরি যে অস্বস্তিতে ছিলেন তা বেশ ভালো মতোই টের পাচ্ছিলেন বন্ধু বারশিম।
কাতারের এই তারকা এরপর যা করলেন তাতে মুগ্ধ নেট দুনিয়া। তিনি আধিকারিককে বলেন, "আমরা দুজনেই যদি জাম্প অফে অংশ না নেই তবে দুজনকেই কি সোনা দেওয়া হবে?" এই প্রশ্নের উত্তরে আধিকারিক জানান, এটা সম্ভব। এই খবর পাওয়ার পর তামবেরি লাফিয়ে জড়িয়ে ধরেন বারশিমকে। গোটা ট্র্যাকে ছোটাছুটি শুরু করেন ইতালিয়ান তারকা। ট্র্যাকের মধ্যেই হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়েন। যেনো তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। এই ইভেন্টটিতে জোড়া সোনা দেওয়া হয় এবং ব্রোঞ্জ দেওয়া হয় নেকাডেসাউকে। রূপো দেওয়া হয়নি।
হাইজাম্পের ফাইনালে দুজনেই ২.৩৭ মিটার উচ্চতা লাফিয়ে যান। তবে ২.৩৯ মিটারে গিয়ে ব্যর্থ হন। এরপর দুজনের জন্য টাইব্রেকিং জাম্প-অফের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই টাইব্রেকারে অংশ না নিয়ে দুই অ্যাথলিটই ভাগ করে নেন সোনা। এক বন্ধুর জন্য অপরের স্বার্থত্যাগের অনবদ্য নিদর্শন দেখা গেলো অলিম্পিকের মঞ্চে। তামবেরি এবং বারশিম একে অপরের বন্ধু প্রায় এক দশক ধরে।
২০১০ সালে বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে দুজনের আলাপ। এরপর বারশিম বরাবরই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে তামবেরির। চোটের কারণে প্রায় সরে দাঁড়াতে চাওয়া তামবেরিকে বুঝিয়ে রিও অলিম্পিকে অংশ নিতে বলেছিলেন বারশিমই। ২০১২ এবং ২০১৬ অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জয়ী কাতার তারকা এবার জিতলেন সোনা। সোনা জেতালেন বন্ধু ইতালির তামবেরিকেও।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন