অবশেষে দেশে ফিরলেন ভীনেশ ফোগাট। দেশে ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ভারতীয় কুস্তিগীর। পাশে ছিলেন সাক্ষী মালিক এবং বজরং পুনিয়া।
শনিবার দিল্লি বিমানবন্দরে নামেন ভীনেশ ফোগাট। প্যারিস থেকে পদক না পাওয়ার যন্ত্রণা নিয়ে ভারতের মাটিতে পা দিলেন কুস্তিগীর। সকলেই তাঁর অপেক্ষা করছিলেন বিমানবন্দরে। সকলের কাছ থেকে অভ্যর্থনা পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সাক্ষী, বজরংরা ভীনেশকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরে তাঁর লড়াইকে কুর্নিশ জানান।
এর আগে গতকাল নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি আবেগতাড়িত পোস্ট করেন ভীনেশ। সেখানে তাঁর ছোটবেলার স্বপ্ন থেকে শুরু করে পিতৃবিয়োগ সবই তুলে ধরেন। কতটা লড়াই করে এই জায়গায় তিনি এসেছেন তা নিয়ে লেখেন ভীনেশ। অলিম্পিকে পদক না পাওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
নিজের ছোটবেলার কথা তুলে ধরে ভীনেশ লেখেন, 'ছোটবেলা জানতাম না অলিম্পিক্স রিংয়ের অর্থ কী। বাচ্চা বয়সে আমি শুধু ভাবতাম, লম্বা চুল রাখব। হাতে মোবাইল ফোন নিয়ে থাকব। যেরকম আর পাঁচটা মেয়ে সেই বয়সে ভেবে থাকে আর কী। আমার বাবা সাধারণ বাস ড্রাইভার ছিলেন। স্বপ্ন দেখতেন, আমি বিমান চালাব আর একদিন এমন আসবে যখন বাবা রাস্তায় বাস চালাবেন আর আমি তাঁরই মাথার ওপর দিয়ে বিমান নিয়ে উড়ে যাব। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের ক্যান্সার স্টেজ থ্রি ধরা পড়ে। সেখান থেকে একাকী মায়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের তিন বাচ্চার লড়াই শুরু হয়।'
তিনি লেখেন, 'মায়ের নাছোড় মানসিকতা দেখে, পরিশ্রম দেখে অনেক কিছু শিখেছি। তাঁর থেকেই এত লড়াই করতে শিখেছি।'
ভীনেশ লেখেন, "আমি শুধু বলতে চাই যে আমরা হাল ছেড়ে দিইনি, আমাদের প্রচেষ্টা থামেনি এবং আমরা আত্মসমর্পণ করিনি। কিন্তু ঘড়ি থেমে গেছে এবং সময় ঠিক ছিল না। তাই আমার ভাগ্যে যা ছিল সেটাই হয়েছে। আমি যে লক্ষ্যে এগোচ্ছিলাম তা পূরণ করতে আমি ব্যর্থ"।
তিনি আরও লেখেন, "এই ধরণের পরিস্থিতিতে আমি নিজেকে ২০৩২ সাল পর্যন্ত খেলতে দেখতে চেয়েছিলাম। কারণ আমি সবসময় চাই লড়াই করি। কুস্তির জন্য লড়াই করতে আমি ভালোবাসি। আমি ভবিষ্যত দেখতে পারি না। ভবিষ্যতে কী হবে তা জানি না"।
প্রসঙ্গত, প্যারিস অলিম্পিকে ৫০ কেজি বিভাগে বিশ্বের ১ নম্বর কুস্তিগীরকে হারিয়ে অভিযান শুরু করেছিলেন ভীনেশ। ফাইনালেও ওঠেন তিনি। কিন্তু ১০০ গ্রাম ওজন বেশি থাকার কারণে প্যারিস অলিম্পিক্সের ৫০ কেজি কুস্তি বিভাগের ফাইনাল থেকে বাদ পড়েন ভীনেশ। যা নিয়ে তোলপাড় হয় ক্রীড়া জগত। জল গড়ায় আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত পর্যন্ত। অনেকেই দাবি করেন ভীনেশকে রুপোর পদক দেওয়া হোক। কিন্তু তা হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন